গোপাল সিং, খোয়াই, ১৮ মে || কাজ, খাদ্য, বিদ্যুৎ পরিষেবার মানোন্নয়ন, শিক্ষক স্বল্পতা দূরীকরণ, সেচ, আবাসন, পানীয় জল ও জীর্ণ রাস্তাঘাটের দ্রুত সংস্কার সহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবির ভিত্তিতে রাজ্যব্যাপী সপ্তাহের আন্দোলন কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে শনিবার মিছিল ও গণ ডেপুটেশনকে ঘিরে প্রকম্পিত হলো জেলা শহর খোয়াইয়ের রাজপথ। সিপিআই(এম)’র খোয়াই মহকুমা কমিটির ডাকে এদিনের উদ্দীপ্ত মিছিল জমায়েত ও গণ ডেপুটেশনের কর্মসূচীতে সামিল ছিলেন মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের জাতি উপজাতি নারী পুরুষ। ছাত্র যুব, শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর, জুমিয়া নারী পুরুষের শ্লোগান সোচ্চার দৃপ্ত মিছিল বেলা বারোটার কিছু পরে শুরু হয় জেলা শহরের কবিগুরু পার্কের রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশ থেকে। তার আগে মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের নারী পুরুষ এসে সামিল হন কবিগুরু পার্কে। লাল ঝাণ্ডার গর্জমান মিছিল বনকর, নতুন টাউন হল কম্পলেক্স, জননেতা রঞ্জন রায় সেতু, নিবেদিতা পার্ক, হাসপাতাল রোড হয়ে নৃপেন চক্রবর্তী অ্যাভেনিউ পার হয়ে জেলা সদরের মূল প্রাণকেন্দ্র সুভাষপার্কের কোহিনূর শপিং কমপ্লেক্স পরিক্রমা করে আবার একই পথ ধরে ফিরে আসে কবিগুরু পার্কে রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে। মিছিলের সামনে এদিনের কর্মসূচীর মূল ব্যানারের সাথেই ছিলেন পার্টির নেতৃবৃন্দ। কবিগুরু পার্কে এসে মিছিলের শেষে আয়োজিত সভায় পার্টি নেতা আলয় রায়ের সভাপতিত্বে দাবীসনদের ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম)’র জেলা সম্পাদক রঞ্জিত দেববর্মা।অপরদিকে পার্টির মহকুমা সম্পাদক পদ্ম কুমার দেববর্মার নেতৃত্বে পাঁচ জনের এক প্রতিনিধিদল মিছিল শেষে অফিসটিলায় গিয়ে মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে সাক্ষাত করে তার হাতে পনেরো দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন।প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন নির্মল বিশ্বাস, পলাশ ভৌমিক, মনোজ দাস ও সুবোধ দেববর্মা।
এদিন সিপিআই(এম)’র প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এদিন মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাবীসনদের ব্যাখ্যা করে বলেন, গোটা মহকুমা জুড়ে কাজ খাদ্যের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। রেগা ও টুয়েপ প্রকল্পের কাজ অপ্রতুল। রেগার কাজের মজুরি বকেয়া তিনটি ব্লকেই। বিরোধী দলের পরিবারের শ্রমিকেরা বৈধ জবকার্ড থাকা সত্বেও সরকারী কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। পানীয় জলের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অনেক পঞ্চায়েত ও এ ডি সি ভিলেজের মানুষজন। সেচের উৎসগুলো বিকল। সংস্কার নেই। নতুন সেচ প্রকল্পও করা হচ্ছেনা। জেলার মূল শহর সহ মহকুমার বিভিন্ন রাস্তাঘাট জরাজীর্ণ অবস্থায়।এগুলোর কোন সংস্কার নেই। বিপর্য্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা। আবাসন প্রকল্পে সুবিধাভোগীরা কিস্তির টাকা পাচ্ছেন না যথাসময়ে। ফলে ঘর তৈরি করতে তারা অসুবিধার সম্মুখীন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স সহ স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে জেলা হাসপাতালে বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা।সামাজিক প্রকল্পের ভাতার টাকা পাচ্ছেন না সুবিধাভোগীরা। ভাতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বিরোধী দলের সমর্থক পরিবারের লোকজনদের। শিক্ষক স্বল্পতার জন্য পঠন পাঠন লাটে উঠেছে মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে। জেলা শহরে ভেঙে পড়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। বিপর্য্যস্ত জল নিকাশী ব্যবস্থা। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে শহর সহ শহরতলীতে। উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় এডিসি’র কোন ধরনের উন্নয়নের কাজ নেই।
এসব সমস্যা সমাধানে মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবী করেন সিপিআই(এম) প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট দাবীসনদের প্রতি সহমত পোষণ করেন।