প্রয়াত বিধায়ক আনন্দমোহন রোয়াজার স্বপ্নের রতননগর আজ ছন্নছাড়া

সুব্রত দাস, গন্ডাছড়া, ২৮ জুলাই || রাইমাভ্যালি বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের প্রয়াত বিধায়ক আনন্দমোহন রোয়াজার স্বপ্নের রতননগর আজ ছন্নছাড়া। নেই জল, নেই বিদ্যুৎ, নেই রাস্তা। ছড়া নালা ডোবার জল পান করে কোন রকমে প্রাণটুকু বাঁচিয়ে রেখেছেন রতননগরবাসী।
বর্তমান ডট কমের যুগে এইভাবে কোন গ্রামে জাতি বেঁচে থাকতে পারে না। কিন্তু কেউ ওই রতননগরবাসীদের হয়ে কথা বলে সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে চরম অস্বস্তিতে রতননগর এডিসি ভিলেজের জনজাতি লোকজন।এখানে বলা হচ্ছে ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমার ডুম্বুরনগর ব্লকের অধীন রতননগর এডিসি ভিলেজের কথা। বর্তমানে উক্ত এডিসি ভিলেজে সাড়ে আটশ পরিবারের প্রায় দুই হাজার জনজাতি লোকের বসবাস। এই রতননগর ছিল বাম দলের প্রয়াত এবং সকলের প্ৰিয় বিধায়ক আনন্দমোহন রোয়াজার আদি বাসস্থান। প্রয়াত আনন্দমোহন রোয়াজার কাছে ছিল এই রতননগর এডিসি ভিলেজটি একটি স্বপ্নের রতননগর। কিন্ত গড়ে তুলে যেতে পারেননি শ্রীরোয়াজা। ১৯৯৮ ইং সালে হঠাৎ দুষ্কৃতীকারীদের আক্রমণে না ফেরার দেশে চলে যান আনন্দমোহন রোয়াজা। আনন্দমোহন রোয়াজা প্রয়াত হওয়ার পর কোমর ভেঙে যায় রতননগরবাসীদের। অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে রতননগর এডিসি ভিলেজের লোকজন। বর্তমানে ওই রতননগর এডিসি ভিলেজে সাড়ে আটশ পরিবারে দুই হাজার লোকের বসবাস। বসবাসরত সকলই জনজাতি অংশের লোকজন। ওই এডিসি ভিলেজের নাগরিকদের অভিযোগ গত এক বছর যাবৎ সঠিক বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছেন না। প্রতিমাসে দুই বা তিন দিন বিদ্যুতের চেহারা দেখতে পান ওই ভিলেজবাসীরা। বিদ্যুৎ নিয়মিত করার জন্য বহুবার বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উক্ত ভিলেজে নেই পানীয় জলের সুব্যবস্থা। যে দুইটি পাম্প হাউজ রয়েছে সেই দুইটি পাম্প হাউজও বিদ্যুৎ এর না থাকায় পানীয় জলের তীব্র হাহাকার রতননগরে। কিন্তু কোন হেলদোল নেই জল দপ্তরের। কোথায় জল মিশন, কোথায় জল জীবন, কোথায় অটল জলধারা, কাউকে খোঁজে পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। গ্রামবাসীদের আরো অভিযোগ রতননগর বাজার থেকে বোয়ালখালি হয়ে রইস্যাবাড়ী যাওয়ার যে রাস্তাটি রয়েছে সেই রাস্তাটি বহু বহু বছর ধরে মানুষ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বারবার পূর্ত দপ্তরকে জানিয়েও এখন পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এদিকে পানীয় জলের অভাবে ছড়া, ডোবা নালার জল খেয়ে বিভিন্ন জল বাহিত রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে আট থেকে আশির জনজাতির লোকজন। প্রয়াত আনন্দমোহন রোয়াজার শূন্যতা আজ অনুভব করে চলেছে রতননগরের মানুষ। বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের চরম গাফিলতির ফলেই আজ প্রয়াত আনন্দমোহন রোয়াজার স্বপ্নের রতননগর নীরবে কেঁদে চলেছে।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*