সুব্রত দাস, গগন্ডাছড়া, ১৯ আগস্ট || আমরা আপনাদেরই ভাই আত্মীয় পরিজন। আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা সর্বদা আপনাদের পাশে আছি। আমরা আপনাদের দুঃখে দুঃখী আবার আপনাদের সুখে সুখী। এই কথাগুলি রবিবার গন্ডাছড়া শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে এসে ভাঙা হৃদয়ে অশ্রু সজল চোখে বলেছেন বাঙালী ঐক্যবদ্ধ সমাজের ত্রিশ জনের এক প্রতিনিধি দল। ওই বাঙালী ঐক্যবদ্ধ সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে পেয়ে শরণার্থীদের বুক ভাঙা আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। প্রসঙ্গত অনাকাঙ্কিতভাবে সাত জুলাই গন্ডাছড়া মহকুমার ত্রিশকার্ড এলাকায় আনন্দমেলার আনন্দ নিতে গিয়ে সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে মহকুমার জগবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা খর্গরাম রিয়াং-এর কলেজ পড়ুয়া ছেলে পরমেশ্বর রিয়াং দুষ্কৃতীকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হন এবং ১২ই জুলাই রাজধানীর জিবিপি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
উল্লেখ্য, সেই রাতেই মহকুমার একাংশ দুস্কৃতকারী সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে গন্ডাছড়া মহকুমার হরিপুর, ছয় এবং সাত কার্ড, নারায়ণপুর, বিশকার্ড, ত্রিশকার্ড, মনোরঞ্জনদাস পাড়া এবং পিছলিঘাট-এর প্রায় শতাধিক বাঙালি পরিবারের বাড়িঘর লুটপাট, চুরি ডাকাতি, গবাদী পশু চুরি শেষে আগুনে পুড়িয়ে স্বর্বশান্ত করে দেয়। গৃহ ছাড়া হয় প্রায় পাঁচ শতাধিক বাঙালী। ১৩ই জুলাই স্বর্বহারা বাঙালিদের গন্ডাছড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের একটি দালানবাড়িতে অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে সরকারীভাবে স্থান দেয়। ১৩ই জুলাই থেকে আজো স্বর্বহারা বাঙালিরা কচিকাঁচাদের নিয়ে এই শিবিরেই অবস্থান করে আসছে। এই স্বর্বহারা শরণার্থীদের সুখ দুঃখের খোঁজখবর নিতে রবিবার এই শিবিরে ছুটে আসেন ছৈলেন্টার বাঙালি ঐক্যবদ্ধ সমাজের প্রায় ৩০ জন প্রতিনিধি। বাঙালি ঐক্যবদ্ধ সমাজের কর্ণধার জ্যোতিলাল সরকারের নেতৃত্বে ৩০ জন প্রতিনিধি শিবিরে এসে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সুখ দুঃখের খোঁজখবর নেন। ঘুরে দেখেন শিবিরের বিভিন্ন দিক। বেশ কিছুক্ষন শরণার্থীদের সঙ্গে বসে আলাপচারিতায় ভাব বিনিময় করেন প্রতিনিধিরা। জ্যোতিলাল সরকারের নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধিরা শরণার্থীদের নগদে দুই লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়ে তাদের সার্বিক শান্তির প্রার্থনা করেন। বাঙালি ঐক্যবদ্ধ সমাজ কর্তৃক দুই লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা এই মহাবিপদের সময়ে পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি শরণার্থীরা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নেতৃত্ব জ্যোতিলাল সরকার সরকারের নিকট দাবী রেখে বলেন, অবিলম্বে পূর্ণ নিরাপত্তার মাধ্যমে সকল শরণার্থীদের আবাস যোজন স্কিমে ঘর নির্মাণ করে স্ব স্ব স্থানে ফিরিয়ে নেওয়া এবং আগামী তিন বছর যাবৎ প্রত্যেক পরিবারকে বিনা মূল্যে রেশন সামগ্রী বিতরণ করার জন্য জোড়দার দাবী জানান।