সিংহভাগ এডিসি ভিলেজের রাস্তা নরক গুলজারে পরিণত, খেসারত দিতে হচ্ছে গ্রামীণ সাধারণ মানুষজনকে

সুব্রত দাস, গন্ডাছড়া, ০২ সেপ্টেম্বর || গন্ডাছড়া মহকুমার ডুম্বুরনগর ব্লক এবং রইস্যাবাড়ি ব্লকের মোট ২৭টি এডিসি ভিলেজের সিংহভাগ এডিসি ভিলেজের রাস্তাই নরক গুলজারে পরিণত হয়েছে। যা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ না করলে বুঝতেই পারবেন না যে কোনো মহকুমায় রাস্তার এই বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এই রাস্তা ধরেই বিভিন্ন গ্রামের লোকজন গন্ডাছড়া মহকুমা সদর বাজার, মহকুমা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন কাজে গন্ডাছড়ায় আসতে হয়। এই বেহাল দশায় পরিণত হওয়া বহু রাস্তার খবর মহকুমার আর ডি দপ্তর, ব্লক প্রশাসন এবং পূর্ত দপ্তরে রয়েছে কিন্তু এই সমস্ত গ্রামীণ রাস্তার কাজে লাভের অংশ কম থাকায় সব জেনে শুনেও মুখ ফিরিয়ে চলেছেন কর্মকর্তারা। সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের পাপের খেসারত দিতে হচ্ছে গ্রামীণ সাধারণ মানুষজনকে।
প্রসঙ্গত, ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমার অন্তর্গত ডুম্বুরনগর ব্লকের গিরাচন্দ্রপাড়া এবং ওয়ানাসাপাড়া এডিসি ভিলেজ। গন্ডাছড়া মহকুমা সদর থেকে ওই দুইটি এডিসি ভিলেজের দূরত্ব প্রায় বাইশ কিলোমিটার। এই ২২ কিলোমিটার রাস্তা ধরেই এই দুইটি এডিসি ভিলেজের লোকজনদের গন্ডাছড়া মহকুমা সদরে আসা যাওয়া করতে হয়। মহকুমা সদর থেকে ওয়ানাসাপাড়া এবং গিরাচন্দ্রপাড়ায় আসা যাওয়া করতে হলে অটো ভাড়া দিতে হয় প্রতি জনে ১৫০ যোগ ১৫০ মোট ৩০০ টাকা। অন্যান্য গাড়িতে আসা যাওয়ায় ভাড়া গুনতে হয় প্রতি জনে ১০০ যোগ ১০০ মোট ২০০ টাকা। এই দুইটি এডিসি ভিলেজেই জনজাতিদের বসবাস। বর্ষাকালে এই ২২ কিলোমিটার রাস্তা ধরে গাড়ী চড়া থাক দূরের কথা পায়ে হেটেও চলাচল করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এই বাইশ কিলোমিটার রাস্তায় নাকি বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ এই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পুকুরের রূপ নিয়েছে। ফলে গাড়ী যাতায়াত করতে চাইলেই ফেঁসে যাচ্ছে গাড়ী। জরুরী ভিত্তিতেও গন্ডাছড়া মহকুমা সদরে আসা যাওয়া করতে পারছে না ওই দুইটি এডিসি ভিলেজের লোকজনরা। বিশেষ করে মুমূরশ রোগী এবং অভিভাবকরা রোগীদের নিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এই দুইটি এডিসি ভিলেজে নিরাপত্তার জন্য যে টিএসআর ক্যাম্প গুলি রয়েছে এই ক্যাম্প গুলির জওয়ানরা পানীয় জলের জন্য তীব্র হাহাকারে ভুগছে। রাস্তার অবস্থা বেহাল থেকে বেহালতর অবস্থায় পরিণত হওয়ায় ওই নিরাপত্তা ক্যাম্প এবং গ্রামে কোন ভাবেই পানীয় জল পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে ডোবা নালার অপরিশ্রুত জল পান করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারই বলুন আর রাজ্য সরকারই বলুন প্রতি বছরই বিভিন্ন এডিসি ভিলেজের রাস্তা তৈরীর জন্য কোটি কোটি টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সঠিক জায়গায় খরচ হচ্ছে না টাকা। কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে একাংশ আমলা এবং নেতৃত্বদের পকেটে। কাঁচা বা কর্দমাক্ত রাস্তা পড়ে রয়েছে ঢাকা জঙ্গলে। বিশেষ করে গন্ডাছড়া মহকুমায় আরডি দপ্তরের বিরুদ্ধে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগের পাহাড় রয়েছে। জানা গেছে, গন্ডাছড়া মহকুমা সদরের আশপাশ এলাকার প্রায় ১০ থেকে ১২টি সিসি রোডের কাজ বের করে কাজ না করিয়ে আর ডি’র জনা কয়েক ইঞ্জিনিয়ার এবং স্থানীয় একাংশ নেতৃত্ব মোটা অংকের টাকা আত্মসৎ করে নিয়েছে। এমন অভিযোগ গ্রামের লোকজনদের।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*