সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ০২ অক্টোবর || মহালয়ার রাত কালিমালিপ্ত কৃষ্ণপুর। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই মহালয়ার আগের রাত থেকেই কৃষ্ণপুর বিধানসভার তেলিয়ামুড়া থানাধীন চাকমাঘাট এলাকায় জুয়া কারবারীদের উদ্যোগে অবৈধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে সুপারস্টার, প্রকাশ্যে লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া, নেশাগ্রস্ত উশৃঙ্খ যুবক-যুবতীদের উদ্যামতা চললো। আর এই অনুমতিহীন সুপারস্টার দেখে বাড়ি ফেরার পথে ভয়াবহ যান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় দুই যুবক।
তারপরেও প্রশাসনের তরফ থেকে বন্ধ করা হয়নি এই অবৈধ সুপারস্টার এবং জুয়া। যদিও মহালয়ার আগের সন্ধ্যা রাতে তেলিয়ামুড়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক একবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, কিন্তু পুলিশ আধিকারিক যাওয়ার খবর পেয়ে সবকিছু বন্ধ করে ‘গা ঢাকা’ দেয় জুয়া কারবারীরা। পুলিশ আসার পরক্ষণেই পুনরায় শুরু হয়ে যায় অবৈধ কর্মকাণ্ড। বারবার তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশকে এই ঘটনার ব্যাপারে জানানো হয়। কিন্তু সেই অবৈধ সুপারস্টার প্রোগ্রাম কিংবা জুয়া রুখতে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয় প্রশাসন। গোটা রাত ব্যাপী প্রকাশ্যে চলে এই জুয়ার অনুষ্ঠান। যার ফলশ্রুতিতে এই সুপারস্টারের প্রোগ্রাম দেখে বাইক যোগে তিন যুবক বাড়ি ফেরার পথে চাকমাঘাট এলাকায় অসম-আগরতলা জাতীয় সড়কে ভয়াবহ যান দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারায় দুই তরতাজা যুবক এবং একজন রাজধানীর জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বলে খবর এলাকা সূত্রে। এযেন প্রশাসনিক ব্যার্থতার এক চরম নগ্ন চিত্র। কিভাবে কোথা থেকে জুয়া কারবারীদের এতটা দুঃসাহস আসলো যে প্রশাসনিক অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে মাত্রাতিরিক্ত সাউন্ড বক্স বাজিয়ে এত বড়ো একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে আড়ালে জুয়া সহ নেশাগ্রস্ত যুবক-যুবতীদের উদ্যামতার চলল মহালয়ার আগের রাত থেকে মহালয়ার ভোর ব্যাপী।
সূত্রের মারফত খবর, গত কিছু দিন পূর্বেও এধরনের সুপাস্টার নামক চিত্রহার স্থানীয় পুলিশকে মেনেজ করা হয়েছিল। পুলিশের বড়বাবু ও মেঝবাবু নগদ নারায়নের বিনিময়ে মেনেজ হয়ে যায়। গত রাতেও তেলিয়ামুড়া থানা এলাকায় এধরণের অনুমতি বিহীন সুপাস্টার নামক চিত্রহার এবং জুয়া পুলিশের বাবুদের মেনেজ করেই চলছিল বলে খবর।
অন্যদিকে এলাকাসুত্রে জানা যায়, কৃষ্ণপুর এলাকার করেকজন স্থানীয় চুনুপুটির পরোক্ষ মদতেই এই ধরনের অনুষ্ঠান চলছে। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাতে পুলিশের টহল দারি নিয়ে। কোথায় পুলিশের ডি আই বি? কোথায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ? নাকি পুলিশের আগাম জানা সত্যেই চলছে এধরণের অবৈধ অনুষ্ঠান?
চাকমাঘাটে সংগঠিত মঙ্গলবার রাতের এই অবৈধ কর্মকাণ্ড রাজ্যের স্বচ্ছ প্রশাসনিক নীতিকে প্রশ্নের মুখে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই প্রশাসনিক ব্যর্থতায় চরম ক্ষোভ সাধারণ মানুষজনদের মধ্যে। সাধারণ মানুষজনদের মধ্য থেকে দাবি উঠছে এই প্রশাসনিক ব্যার্থতার ঘটনায় হস্তক্ষেপ করুক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তৎসঙ্গে হস্তক্ষেপ করুক খোয়াই জেলার জেলাশাসক সহ তেলিয়ামুড়া মহকুমা শাসক। অন্যথায়, আগামী দিন প্রশাসনের উপর থেকে আস্থা হারাবে সাধারণ মানুষ।