খোয়াই সরকারী খাদ্য মজুত ভান্ডারের চাল বোঝাই ট্রাক থেকে চাল চুরি

riceগোপাল সিং, খোয়াই, ৩০ মে ।। খোয়াই খাদ্য জনসংভরন ও ভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের অধীন খোয়াই সরকারী খাদ্য মজুত ভান্ডারের চাল বোঝাই ট্রাক থেকে চাল চুরির ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে খোয়াই অফিসটিলায়। জেলা সদর খোয়াইয়ের সবচাইতে হেভিওয়েট ও ব্যাস্ততম স্থান হচ্ছে অফিসটিলা। হেভিওয়েট এ কারনেই যে, প্রায় সমস্ত দপ্তরই রয়েছে অফিসটিলার মানচিত্রে। এর মধ্যে জেলা শাসকের অফিস থেকে খাদ্য মজুত ভান্ডারের দূরত্ব খুব বেশী নয়। যদিও খোয়াইয়ের এই খাদ্য গোদামের কেলেঙ্কারী নতুন কিছু নয়। জন্মলগ্ন থেকেই খোয়াই খাদ্য দপ্তরের বিভিন্ন অভিযোগ স্মরনীয় হয়ে আছে। খোয়াই খাদ্য গোদামের সমস্ত চাল পাচার করে বালু ভর্ত্তি বস্তা রাখার মতো কলঙ্কজনক ঘটনার সাক্ষী খোয়াইবাসী।
শনিবার সকালে রহস্যজনকভাবে খোয়াই অফিসটিলা স্থিত সরকারী খাদ্য মজুত ভান্ডারের চাল বোঝাই ট্রাক থেকে চুরি হয়ে গেল সরকার প্রদত্ত সাধারন মানুষের জন্য বরাদ্দ রেশনের চাল। কিন্তু শনিবার ভোর রাতে পুলিশি টহলের আঁচ করতে পেরে চোরের দল গা ঢাকা দেয়। কিন্তু চোরের দল হঠাৎ পুলিশের গাড়ী দেখতে পেয়ে তড়িঘরি করতে গিয়ে এক বস্তা চাল ট্রাকের পেছনে, রাস্তার উপরই ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ ইচ্ছে করলেই চোরদের পাকড়াও করতে পারতো। চোরদের এই কান্ড স্বচক্ষে দেখেও কিভাবে পুলিশ এই সুযোগ হাতছাড়া করল, তাতেই প্রশ্নের মুখে আবারো খোয়াই থানা বাবুরা। জনমনে গুঞ্জন রয়েছে পুলিশ প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতেই ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়ে। জানা যায় খাদ্য মজুত ভান্ডার থেকে অফিসটিলা হয়ে জাম্বুরা যাবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা চাল বোঝাই গাড়ীগুলির চালককে সামান্য সতর্ক করেই সেখান থেকে কেটে পড়ে পুলিশ।
তবে শনিবার প্রাত:কালে ভ্রমনকারীদের একাংশের নজরে আসে বিষয়টি। খবর পৌছায় মিডিয়ায়। গাড়ীর চালকরা মিডিয়াকে জানায়, দীর্ঘ টালবাহানা সহ্য করে ৩-৪ দিন গাড়ী নিয়ে রাস্তায় অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের। খাদ্য মজুত ভান্ডারে স্থানসঙ্কুলতার জন্যই এই হয়রানী। তার উপর লোডিং-আনলোডিং এ সময় লাগে। এর মধ্যেই এধরনের ঘটনা। কিন্তু জনগন বলছে অন্যকথা। মাসের শেষ প্রান্তে ২৬ তারিখ নাগাদ রেশন ডিলাররা টাকা জমা দিয়ে পরবর্তী মাসের ১-২ তারিখের মধ্যে চাল-চিনি-লবন নেওয়ার কথা থাকলেও, নিয়মমাফিক হচ্ছেনা সবকিছু। অন্তত খোয়াই খাদ্য মজুত ভান্ডারে দেখা যাচ্ছে কর্তা বাবুদের যোগসাজশে চাল-চিনি-লবন ইত্যাদি খাদ্য গোদামেই মজুত রাখা হয়। সুযোগ বোঝে গাড়ী দিয়ে সেই মালামাল কালোবাজারীর কাছে পৌছে দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয় একটি দুষ্ট চক্র এভাবে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা গরীব থেকে প্রতিনিয়ত চাল চুরি করছে। ওজনে কম দিচ্ছে। নায্য পাওয়া থেকেও কম দিচ্ছে। সবকিছুই ম্যানেজ করে ধারাবাহিকভাবে চলছে। রেশনের চাল, শিশু খাদ্য কেলেঙ্কারী সবই হচ্ছে। চুরির হিড়িক ভাইরাসের মতো ছড়াচ্ছে। ভদ্রবেশী সেই সমস্ত দূর্নীতিবাজদের হাতে দপ্তরের ক্ষমতা থাকলে অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবেনা বলেই ধরে নিয়েছেন খোয়াইবাসী। তাই নিরুপায় জনসাধারন এখন প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*