স্বাস্থ্য ও সচেতনতা ডেস্ক ।। সূর্যরশ্মি থেকে ত্বক বাঁচাতে গিয়ে ভুল সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন বেছে নেয়া, ক্ষারবহুল সাবান ব্যবহার এবং ক্ষণে ক্ষণে প্রসাধনী বদল- এগুলো সবই নারীদের কিছু সাধারণ ভুল, যেগুলো তারা ত্বকের যত্ন নেয়ার জন্য করলেও এর প্রভাব পড়ে উল্টোটা। এ ধরনের বিষয়গুলো ত্বকের যত্নকালীন এড়িয়ে চলার জন্যই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ভুল সানস্ক্রিন বেছে নেয়া ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ দৃশ্যমান হওয়ার প্রধান কারণ হলো সূর্যরশ্মি। প্রতি তিন বছরে ত্বকে দুই শতাংশ বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। ইউভিএ প্রতিরোধক এবং এসপিএফ ৩০ সমৃদ্ধ ভালো মানের সানস্ক্রিন এক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে। শীত ও বর্ষায় এবং গাড়িতে চড়ে বাইরে বেরোলা সানস্ক্রিন উপেক্ষা গাড়ির জানালার কাঁচ ইউভিএ রশ্মিকে প্রতিহত করে না (টিনটেড কাঁচ ছাড়া)। সূর্য মেঘের সম্পূর্ণ আড়ালে থাকলেও ৫০ শতাংশ ইউভিএ রশ্মি উপস্থিত থাকে আমাদের চতুর্দিকে। তাই ত্বকের যত্নে সেরা বন্ধু যে সানস্ক্রিন, এ বিষয়ে মোটেই সন্দেহ রাখবেন না। সারা বছর তো বটেই, দিনের বেলা বাড়িতে থাকলেও ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন। ক্ষারযুক্ত সাবান ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক করে, ফল অকালে বার্ধক্যের ছাপ। ক্ষারবিহীন সাবান বা সাবান ছাড়া অন্যান্য ত্বক পরিষ্কারক স্পর্শকাতর ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য আদর্শ। অপর্যাপ্ত ঘুম অনিয়মিত ঘুম দেহে মানসিক চাপজনিত হরমোন নিঃসৃত হওয়ার অন্যতম কারণ, যা ত্বককে শিথিল করে ফেলে এবং ত্বকে বলিরেখা পড়ে ও চোখের নিচের অংশের স্পর্শকাতর ত্বক কালচে হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত সময় পর্যন্ত ঘুমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করুন এবং কখন ঘুমোবেন ও ঘুম ভেঙে উঠবেন- তা একটি নির্দিষ্ট চক্রে নিয়ে আসুন। এতে স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া নিশ্চিত। অপর্যাপ্ত জল পান ত্বক কতগুলো কোষের সমষ্টি, আর এই কোষ সৃষ্টি হয় জল থেকে। অপর্যাপ্ত জল পান করলে নতুন কোষ সৃষ্টি ব্যাহত হয় এবং পুরনো কোষ মরে যেতে থাকে, ফলে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক। শুষ্ক ত্বক কম নমনীয় হয় এবং বলিরেখাপ্রবণ হয়ে ওঠে। ভুল প্রসাধনী বাছাই বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বা পছন্দের তারকার পছন্দের পণ্য হিসেবে কখনোই নিজের জন্য প্রসাধনী বাছাই করবেন না। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী এবং ত্বকের প্রয়োজন মেটানোর মতো উপাদান প্রসাধনী পণ্যটিতে রয়েছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তবেই সেটি বেছে নিন। ভালো পণ্যের রাতারাতি প্রভাব চেয়ে অধৈর্য্য হওয়া ও দ্রুত প্রসাধনী পরিবর্তন কোনো প্রসাধনী পণ্য যতোই ভালো মানের হোক না কেন, তা কখনোই ত্বকের কোনো সমস্যার সমাধান রাতারাতি করতে পারে না। তাই ঘন ঘন প্রসাধনী বদলাবেন না। সবচেয়ে ভালো পণ্যটিও আপনার ত্বকে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে ন্যূনতম দুই থেকে তিন মাস সময় নেবে। ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নেয়া ত্বকের কোনো সমস্যায় পড়লে- র্যা শ, অ্যালার্জি বা ব্রনের প্রাদুর্ভাব দেখলে নিজের পছন্দমতো পণ্য ব্যবহার না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন যত দ্রুত সম্ভব। খাদ্যতালিকায় অসামঞ্জস্যতা খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই রাখুন, তাহলে প্রাকৃতিকভাবেই তারুণ্যে ভরপুর নমনীয়, কোমল ও উজ্জ্বল ত্বক পাবেন। ত্বকের যত্নে ভুল সম্পর্কে সচেতন হোন এবং ভুলগুলো এড়িয়ে চলুন। ত্বককে রাখুন চিরসবুজ।