গোপাল সিং, খোয়াই, ৩ জুন ।। খোয়াই চেবরীর এলসিএম গিরিন্দ্র দেববর্মার স্ত্রী বিশ্বলক্ষী দেববর্মা দীর্ঘদিন যাবত পেরে রোগে ভোগছিলেন। খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও কোন সুফল না পাওয়ায় হতাশায় ভোগছিলেন। এমন সময় সূত্র মারফত সন্ধান পান জিরানীয়া মান্দাই এলাকার ত্রিপুরেশ্বরী একটি আশ্রেমের। ৩০-৩২ বছরের জটাধারী ‘মা’ যে কোন রোগের চিকিৎসা করেন মোটা টাকার বিনিময়ে। গিরিন্দ্র দেববর্মাও নিজের স্ত্রীর সুস্থ্য হবার আশা নিয়ে ২২শে মে স্ত্রীকে নিয়ে আশ্রমে পৌছান। ভর্ত্তি করান আশ্রমেই। কারন আশ্রম তো আর আশ্রম নয়, ওপেন অপারেশন থিয়েটার যে! জানা যায় রোগীকে অচৈতন্য না করেই ব্লেড দিয়ে পেট কাটা হয়। অভিনব অপারেশন শেষে রোগীনীর স্বামী ও পরিবারকে ‘মা’ জানান, পেট থেকে তাবিজ-কবজ, নুংরা পদার্থ সব বের করা হয়েছে। বলা হয় রোগীনি সম্পূর্ন সুস্থ্য হয়ে যাবে। বিশ্বলক্ষী দেববর্মাকে চিকিৎসার পর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু ৩১শে রবিবার গভীর রাতে বিশ্বলক্ষী দেববর্মার মৃত্যু ঘটে।
গিরীন্দ্র দেববর্মার বাড়ী হলং মতাই এডিসি ভিলেজের মাইং বিক্রেম গ্রামে। স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে গ্রামে পৌছতেই মানুষের ভীড় জমতে শুরু করে। গ্রামের মেম্বার সুশীলা দেববর্মা বলেন, মৃতা বিশ্বলক্ষী দেববর্মার পেটের দু’দিকেই কাটা ছিল কিনা, তা দেখতে দেয়নি পরিবার। তবে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে মৃতা বিশ্বলক্ষী দেববর্মার দুটি কিডনিই খুলে নিয়েছেন আশ্রম মাতা। মানুষের সন্দেহ থাকলেও কুসংস্কারে বশ:বর্তী মানুষ সাহস যোগাতে পারছেন না কোনও তদন্ত করতে কিংবা পুলিশে অভিযোগ করতে। যদি আশ্রম মাতা বাণ-টান ছাড়েন! তবে কি হবে! তবে জানা যায় জিরানীয়া মান্দাই এলাকার ত্রিপুরেশ্বরী আশ্রমে এধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের ভীড় রয়েছে। প্রশাসনকে ঘুমে রেখে নিরীহ মানুষকে ঠকিয়ে এভাবেই কিডনি খুলে নিয়ে রমরমা ব্যবসা চালানো হচ্ছে। কিন্তু কুকর্মগুলি সামনে আসছে না। এই অবৈধ ব্যবসায় ত্রিপুরেশ্বরী আশ্রমের মা-এর ভাই খোয়াই তুলাশিখর ব্লক সংলগ্ন এলাকায় ঘর জামাই হিসাবে নিজের পকেট ভারী করতে বুরবক খোঁজতে ব্যস্ত। সারা রাজ্যে নাকি এধরনের এজেন্ট রয়েছে আশ্রমটির। দীর্ঘদিন যাবত মানুষের অঙ্গ কেটে রেখে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া এধরনের প্রতারনার যোগ্য জবাব দিতে ঠিক কবে নাগাদ রাজ্য সরকারের পুলিশ ও প্রশাসন মাঠে নামবে তা এখনই হলফ করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু যতদিন এগুবে ততদিনে ততটা প্রান যাবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যাচ্ছে বিশ্বলক্ষী দেববর্মার মৃত্যুর মতো ঘটনার পর।