গোপাল সিং, খোয়াই, ১৯ জুন ।। শুক্রবার কল্যানপুর থানা এলাকার শান্তিনগর গ্রামে জেলা বন আধিকারিক সহ বনকর্মীরা অভিযান চালিয়ে বিশাল পরিমানে কাঠের লগ, সাইজ করা কাঠ ও জেনারেটর উদ্ধার করে। এই জেনারেটর ব্যবহার করে অত্যাধুনিক মেশিন দিয়ে গাছের লগ থেকে কাঠ চিরানো হতো। আর চিরানো কাঠ পাচার করে রমরমা ব্যবসা চালানো হচ্ছিল দূর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন শান্তিনগরের বাসিন্দা রাধারানী দেববর্মার বাড়ি থেকেই। উনার বাড়ীতে জেলা বন আধিকারিক প্রসাদ রাও এর নেতৃত্বে বন কর্মীরা তল্লাশী চালিয়ে বিভিন্ন গাছের লগ, কাঠ ও একটি জেনারেটর উদ্ধার করে। এ যেন বাড়ী নয় গাছ কাটার কারখানা। গাছের লগে ভরপুর বাড়ীর চৌহর্দ্দি। তল্লাশী চলাকালীনই জেনারেটরটি উদ্ধার হয়। বন আধিকারিকের অনুমান এই জেনারেটর ব্যবহার করেই কাঠ চিরানোর মেশিন চালানো হতো। এখান থেকেই বড় রকমের অবৈধ কাঠের ব্যবসা চালানো হতো। যেভাবে গাছ কাটার হিড়িক লেগেছে আমাদের এই ছোট্ট পাহাড়ী রাজ্যে, তাতে যে পাহাড়ী অলংকারটি নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ছে সেদিকে নজর নেই রাজ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশকে কলুষিত করার প্রয়াসে মগ্ন কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের। তাদের লালসার সামনে প্রকৃতিকে হার মানতে হচ্ছে। অধিক মুনাফা অর্জনের নামে বন ধ্বংশ করার যে উদ্দেশ্যে এই লোভী মানুষগুলো মেতেছে, তার কুপ্রভাব থেকে যে তারাও মুক্ত হতে পারবেনা, তা তাদের বোঝাবে কে? আর বোঝে উঠতে উঠতে বন-জঙ্গল চলে যাচ্ছে ফ্ল্যাস-ব্যাকে, ইতিহাসের পাতায়।
এদিকে কল্যানপুর থানা এলাকার শান্তিনগর গ্রামে বন দপ্তরের এদিনের অভিযানে সাফল্য আসলেও মালিক পক্ষ কিন্তু গা ঢাকা দিয়েছে। আর তাদের জালে তুলতে শান্তিনগর গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। তবে দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় একটি বাড়িতে অবৈধভাবে গাছ কেটে পাচার করা হলেও, বিষয়টি কিভাবে গ্রামবাসীর নজরে আসেনি তা নিয়েই চিন্তিত বন দপ্তর। তাহলে কি গ্রামবাসীদের মধ্যেও সচেতনতার অভাব রয়েছে? কেন জেনেশুনেও নীরব ভূমিকায় ছিল গ্রামবাসীরা? এসকল প্রশ্নের মধ্যেই বন দপ্তরকে ঘুমে রেখে জেলার বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বনদস্যুরা চোরাকারবার অব্যহত রেখেছে। চাই আরোও অনেক বেশী তৎপরতা।