জাতীয় ডেস্ক ।। প্রবল বৃষ্টিতে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে মুম্বাইয়ের জনজীবন। টানা বৃষ্টি ও পানি নিস্কাশনের দূর্বল ব্যবস্থার কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন বাণিজ্যনগরীর বাসিন্দারা। ফলে কাজকর্মে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
শুক্রবার বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে দুইজন মারা গেছেন। কোথাও কোথাও বুক সমান জল জমে গেছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টাতেও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যেতে।
২০০৫ সালের ২৬ জুলাই ২৪ ঘণ্টায় ৯৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল মুম্বাইয়ের সান্তাক্রুজে। এ দফায় অবশ্য পরিমাণ এতটা বেশি নয়। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ধারাভিতে- ৩১০ মিলিমিটার। সান্তাক্রুজ আর কোলাবায় বৃষ্টি হয়েছে যথাক্রমে ২৮৩.৪ ও ২০৮.৮ মিলিমিটার। অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে শুক্রবার সকাল থেকেই পানির তলায় চলে যায় শহরের বিস্তীর্ণ অংশ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে সিয়ন, মাতুঙ্গা, সান্তাক্রুজ, দাদার ও বোরিভেলি অঞ্চলগুলো।
বৃহন্মুম্বাই পৌরসভা বিবৃতিতে বলেছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বোম্বে হাইকোর্টে এ দিনের মতো বন্ধ হয়ে যায়। মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় যাবতীয় ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
প্রবল জলোচ্ছ্বাস সম্পর্কে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। মুম্বাইবাসীকে বাড়িতে থাকার এবং সমুদ্রের আশপাশ না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শহরের পরিবহন ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে। সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টিতে রেললাইনে জল জমায় লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেনেরও একই অবস্থা। তবে দুই/একটি ট্রেন ছাড়ার খবর আসছে। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে বিমানগুলো নির্ধারিত সময়েই ওঠানামা করছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় থাকায় মৌসুমি বায়ু অতিসক্রিয় হয়ে পড়েছে। এর কারণেই প্রবল বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড়টি আসতে আসতে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
আমেরিকার আবহাওয়া দপ্তরে আগামী ১০ দিনে প্রায় ৯০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে মুম্বাইয়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য শহরের বিভিন্ন অংশে নৌ সেনা মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই পরিস্থিতির জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে ন্থানীয়রা। মুম্বাইয়ে বৃষ্টি হলেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়া এবং শহরবাসীর নাজেহাল হওয়াটা এখন একটা বাত্সরিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তাদের দাবি। বর্ষা মানে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্ক মুম্বাইবাসীর কাছে।