ইন্টারনেট-ইমেলের দিন শেষ, এবার আসছে ব্রেন মেল

vmতথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক ।। ইন্টারনেট, ইমেলের দিন শেষ। এবার আসছে ব্রেন মেল। কোনো আইডি, পাসওয়ার্ড লাগবে না। কাউকে কোনো বার্তা দিতে হলে জাস্ট ভাবুন। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে সেই খবর।
অবাক হওয়ার কিছু নেই। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বাস্তব রূপ নিলে আপনার মাথায় কী চলছে তা বুঝে নেবেন অন্য কেউ। বিজ্ঞানী পরিভাষায় যাকে বলে মস্তিষ্ক থেকে মস্তিষ্কে সংযোগস্থাপন।
বার্সেলোনার স্টারল্যাবের CEO তথা ব্রেন টু ব্রেন কমিউনিকেশন প্রজেক্টের শীর্ষ কর্তা জুলিয়ো রুফিনির দাবি, এই প্রথম তিনি দুই ব্যক্তির ওপর তার গবেষণার সফল প্রয়োগ করেছেন। কেরলের এক ব্যক্তির মস্তিষ্ক নাকি কম্পিউটারের মাধ্যমে যোজন দূরের এক ব্যক্তির মগজের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে।
ব্রেনের সঙ্গে কম্পিউটার যুক্ত করে ওই ব্যক্তিকে কল্পনা করতে বলা হয় যে, তিনি তার হাত অথবা পা নাড়াচ্ছেন। যখন তিনি পা নাড়ানোর কথা ভাবছেন, তখন সেটাকে শূন্য হিসেবে লিখে নেয় কম্পিউটার। আর যখন হাত নাড়ার কথা ভাবেন তখন সেটাকে ১ হিসেবে লিখে নেয়।
এভাবে বারবার করার মাধ্যমে সেই বার্তা পাঠানো হয় ফ্রান্সে বসে থাকা এক ব্যক্তির ওপর। ব্রেন টু ব্রেন কমিউনিকেশনে রিসিভারের কাজ করেছেন তিনি। একটি রোবটের মাধ্যমে ফ্রান্সে থাকা সেই রিসিভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
সেই রোবট রিসিভারের মস্তিষ্কে খুব সামান্য পরিমাণে ইলেকট্রিকের শক দেয়। যিনি বার্তা পাঠাচ্ছেন তিনি যদি হাত নাড়ার কথা ভাবেন তাহলে রোবটের মাধ্যমে রিসিভার দেখে, তার মাথায় আলো জ্বলে উঠছে। চোখ বন্ধ থাকলেও তার এই অনুভূতি হয়। আর যখন কেরলের ব্যক্তি পা নাড়ানোর কথা ভাবেন, তখন ফ্রান্সের রিসিভারের মাথায় কোনো আলো জ্বলার অনুভূতি হবে না।
এই গোটা প্রক্রিয়া শুনতে সহজ মনে হলেও আদতে তা নয়। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন যিনি বার্তা পাঠাচ্ছেন তার মাথায় অন্য কোনো চিন্তা এসে গেলে গোটা প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। এজন্য ওই ব্যক্তির ওপর এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করার আগে তাকে রীতিমতো ভাবনা স্থির রাখার অনুশীলন চালাতে হয়েছে।
এর আগেও এ ধরনের সংযোগ স্থাপনের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। গত বছর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিলেন, একটি মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে একটি ইঁদুরের লেজের মধ্যে তারা সংযোগস্থাপন করেছেন। ব্যক্তিটি যেরকম ভাববেন, তার ভিত্তিতেই ইঁদুরের লেজটিতে নড়াচড়া লক্ষ্য করা যাবে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্রেন টু ব্রেন কমিউনিকেশনের ওপর গবেষণা হচ্ছে। তবে সাফল্য এখনো আসেনি। রুফিনির দাবিকে মানতে চায়নি অনেকেই। কেউ কেউ তার এ দাবিকে নতুন একটি স্টান্ট হিসেবে কটাক্ষ করেছেন। যদিও নিজের লক্ষ্যে অবিচল রুফিনি। তিনি ভাবনা, বিচারবুদ্ধি, সংবেদনশীলতার মতো বিষয়গুরোও দুই মস্তিষ্কের মধ্যে আদান-প্রদানের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সে যাই হোক, মস্তিষ্কের সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগ স্থাপন সত্যিই সম্ভব হলে অসত্‍‌ উদ্দেশ্যে মগজ ধোলাই বাস্তব রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*