ত্রিপুরায় দুই শূন্য আসনে জয় বামপ্রার্থীদের – ফলাফল যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী

newদেবজিত চক্রবর্তী, আগরতলা, ৩০ জুন ।। ১৩ প্রতাপগড়, ৪৬ সুরমা – এই দুই কেন্দ্রের ২৭শে জুন উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সুরমা কেন্দ্রে CPI(M) প্রার্থী অঞ্জন দাস দলীয় ভাবে সংগঠনের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত আগে থেকেই, তবে ১৩ প্রতাপগড় কেন্দ্রে রামু দাসকে রাজ্যের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত কবিমন্ত্রী অনিল সরকারের স্থানে দাঁড় করানোয় দলের ভেতরে নিঃশব্দে কথা বার্তায় অনেকেই অপেক্ষায় ছিলেন ফলাফল নিয়ে যদিও প্রকাশ্যে আসেনি সেইসব। ৩০শে জুন সকাল থেকেই প্রতাপগড় আর সুরমার ফলাফল জানার আগ্রহ যেমন দেখা গেছে তেমনি দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান দখলের যুদ্ধের প্রতিও সমান দৃষ্টি ছিল মানুষের। দুই কেন্দ্রের প্রাথমিক গননার সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাধারন মানুষের আগাম হিসেব বাস্তব হয়ে উঠার লক্ষন প্রকাশ পেয়ে যায়। বিশেষ করে ১৩ প্রতাপগড় কেন্দ্রে রামু দাস ভোট প্রাপ্তির সংখ্যায় সব হিসেব ছাপিয়ে যাবে প্রত্যয়ী ছিলেন CPI(M) শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রত্যাশা কানায় কানায় পূর্ণ করেছেন রামু দাস – ১৭৩২৬ ভোটে রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সুরমা কেন্দ্রে CPI(M)-র অঞ্জন দাস ১৫৩০৯ রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন। শান্তি, উন্নয়ন আর অগ্রগতির আহ্বানে প্রতাপগড় আর সুরমা বামেদের বিমুখ করেনি। তবে এই রাজ্যে দুই কেন্দ্রের ভোট রাজনৈতিক চিত্রপটে একেবারে নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। ত্রিপুরায় যে কোনো নির্বাচনে ডান বামের লড়াইয়ে বিধানসভার উপনির্বাচনে পদ্মফুল কংগ্রেসকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দেয়ার ফলে নিশ্চিৎভাবেই এবার বিজেপি এই ফলাফলকে পুঁজি করে জমি দখলে মরিয়া প্রয়াসে নামবে সন্দেহ নেই। বামেদের লড়াইয়ের অভিমুখ, কৌশলে ও পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী বলাই বাহুল্য। নিঃশব্দে পদ্ম প্রস্ফুটিত হচ্ছে রাজ্যে প্রমান দিয়েছে বিগত নানা পর্বের নির্বাচনে। দুই কেন্দ্রের অসময়ের ভোট বিশেষ করে কংগ্রেসের প্রতি মানুষের সমরথনের ক্ষেত্রে যে ইঙ্গিত দিয়েছে – তাতে সঙ্কট আরো ঘনীভূত হবে আগামীতে। উপনির্বাচনে জয়ের বিশ্লেষন বামনেতৃত্বের জন্যও নতুন মূল্যায়ন নিয়ে হাজির হয়েছে। সাম্রতিক উপনির্বাচনে বিজেপি সেকেন্ড বয় হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন শক্তির উত্থান পর্ব শুরু হল কিনা জানান দেবে ভবিষ্যৎ। রেকর্ড ভোটে CPI(M)-র জয়ের পরেও উপনির্বাচন আক্ষরিক অর্থে ক্ষমতাসীন দলের জন্য  রাজনীতির বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দায়িত্ব নিয়েই হাজির হয়নি উত্থিত নবশক্তির যাত্রা আটকাতেও দলীয় স্ট্র্যাটেজীতেও পরিবর্তন আস্তে যাচ্ছে সময়ের বিচারে। বামেদের ধার করা শব্দে যদি এই উপনির্বাচনের ফল বিশ্লেষন করা হয় তবে – সামনে আরো জোর লড়াই যে কঠিন থেকে কঠিনতর হতে যাচ্ছে বলার অপেক্ষা রাখেনা।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*