গোপাল সিং, খোয়াই, ৩ জুলাই ।। স্বাধীনতার ৬৮ বছর পরও বর্তমান খোয়াই জেলায় চোরের উপদ্রবে রাত্রি জেগে নিজেদের মূল্যবান জীবন ও মালামাল ও গবাদী পশু রক্ষার্থে রাত্রিকালীন প্রহড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন খোয়াইয়ের জনসাধারন। অথচ সীমান্তে বিএসএফ, সীমান্তের ভেতরে আসাম রাইফেল, ত্রিপুরা পুলিশ জনগনের জান ও মাল রক্ষার্থে নিয়োজিত। তাছাড়া খোয়াই সীমান্তে ৯৯% কাঁটা তারের বেড়া রয়েছে। তারপরও নিত্যদিনই কাঁটাতারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে খোয়াইয়ের গ্রাম এবং শহরে হানা দিচ্ছে বাংলাদেশী চোরের দল। বিশেষ করে খোয়াই শহরের আশপাশ এলাকা যেমন পহড়মুড়া, মজুমদার টিলা, বাল্লারবেড়, গৌরনগর, হাতকাটা বাজার, রতনপুর, মনাইছড়া, বেলছড়া, বগাবিল, উত্তর দূর্গানগর সহ বিস্তীর্ন এলাকায় গ্রামবাসীরা বিশেষ করে শ্রমিক-কৃষক শ্রেনীর জনসাধারনই রাত জেগে নিজ নিজ বাড়ী-ঘর পাহাড়া দিচ্ছেন।
জানা যায় খোয়াইয়ের হাতকাটা এলাকায় বাজার ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে বাজার পাহাড়া দেন। আশ্চর্য্যজনক ঘটনা হচ্ছে, হাতকাটা বাজারে বর্তমানে একটি এস.পি.ও. ক্যাম্পও রয়েছে। তারপরও জনগন ভরসা রাখতে পারছেন না। এলাকার শ্রমিক-কৃষক শ্রেনীর পরিবারগুলিকেই বেশী দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারন সারা দিন হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পর রাত জেগে পাহাড়া দিতে হচ্ছে তাদেরকেই। তা না হলে গবাদী পশু ও নিজেদের ঘর-বাড়ী ও জীবন রক্ষা করা সম্ভবপর হবেনা। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ খোয়াই সীমান্ত’র ৯৯% কাঁটাতারের বেড়া থাকা সত্বেও কিভাবে বাংলাদেশী চোরেরা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে অনুপ্রবেশ করছে, সেটাই এখন সবচাইতে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোয়াই সীমান্তে বিএসএফ’র ঢিলেঢালা প্রহড়াকেই দায়ী করছেন জনসাধারন। তারমধ্যে গোটা বিষয়ে কোন হেলদোল নেই খোয়াই পুলিশ প্রশাসনের। শহরবাসীর অভিযোগ, শুধুমাত্র চোরের খোঁজ নয়, স্বয়ং চোরকে ধরিয়ে দিলেও খোয়াই পুলিশ প্রশাসন উল্টো চোরদেরই রক্ষা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এমন শীতল আইনের ধারা প্রয়োগ করেন যাতে করে চোরের দল অনায়াসেই জামিন পেয়ে যায়। এমন বহু ঘটনার সাক্ষী খোয়াই এর জনসাধারন। আর এসব কারনেই খোয়াই জেলার গ্রামে-গঞ্জে এমনকি শহরেও নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে রাত্রিকালীন প্রহড়া দিচ্ছেন সচেতন মানুষ। কিন্তু এভাবে আর কত দিন চলবে, প্রশ্ন জনমনে।