চীনে তিব্বতি-মুসলিম সংখ্যালঘুদের পাসপোর্টে ‘নিষেধাজ্ঞা’

cnআন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। তিব্বতি ও মুসলিমসহ বিভিন্ন উপজাতি সংখ্যালঘুদের পাসপোর্ট দেয়ার ওপর কার্যত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন, সোমবার জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চীনা পর্যটকদের বিশ্বের অন্যান্য দেশে ঝাঁকে ঝাঁকে বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ দিনকে দিন বাড়ছে এবং এর মধ্যেই পাসপোর্ট প্রদানে দুই স্তরবিশিষ্ট একটি পদ্ধতি চালু করেছে চীনা প্রশাসন- একটি হলো, দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ হ্যান জাতি অধ্যুষিত জনবহুল অঞ্চলগুলোর জন্য এবং অপরটি হলো, দেশটির তিব্বতি ও মুসলিম সংখ্যালঘুদের আদিবাস এলাকাগুলোর জন্য। এই দ্বিতীয় স্তর, অর্থাৎ তিব্বতি ও মুসলিমদের পাসপোর্ট পাওয়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে দুঃসাধ্য। এইচআরডব্লিউ’র চীনের পরিচালক সোফি রিচার্ডসন বলেন, ‘যদি আপনি একজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু হন এবং দেশটির এমন এক অঞ্চলের বাসিন্দা হয়ে থাকেন, যেখানকার অধিকাংশ মানুষই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের- তাহলে আপনার জন্য পাসপোর্ট পাওয়া দৃশ্যত অসম্ভব।’ রিচার্ডসন বলেন, ‘বিষয়টা স্পষ্টতই এমন নয় যে কয়েকজন ব্যক্তিকে পাসপোর্ট সরবরাহ করতে গিয়ে চীনা প্রশাসন বড় ধরনের জটিলতায় পড়েছে। অনেকে এমনটা মনে করতেই পারে যে ধীরে ধীরে এসব সুযোগ-সুবিধা সংখ্যালঘুদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেয়া হবে, কিন্তু আসলে বিষয়টি মোটেই তা নয়।’ চীনের অধিকাংশ অঞ্চলেই পাসপোর্ট ইস্যু করার সর্বোচ্চ সময় ১৫ দিন। যদি এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট সরবরাহ করা কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে আবেদনকারীকে অবশ্যই সে বিষয়ে অবহিত করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তুর্কী ভাষাভাষী এক কোটি উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশ এবং তিব্বতে পাসপোর্টের আবেদনকারীদের জন্য প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রশাসন। ওই পদ্ধতি অনুযায়ী পাসপোর্ট পেতে আবেদনকারীকে অনেক বেশি তথ্যপ্রমাণ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জমা দিতে হয় এবং অনেক সময় রাজনৈতিক সুপারিশও প্রয়োজন হয়। এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ১০ শতাংশেরও কম স্থানীয় প্রশাসন এই প্রাচীন ও ধীরগতির পদ্ধতিটি ব্যবহার করে। ওই প্রশাসনাধীন অধিকাংশ মানুষই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তিব্বতের শাংদু প্রশাসন ২০১২ সালে মাত্র দু’টি পাসপোর্ট সরবরাহ করেছে। অথচ সেখানকার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় লাখ। আর গোটা তিব্বতে এ সংখ্যা কতো, সে সম্পর্কে কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। থাইল্যান্ডে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য গত বছর কয়েকশ’ উইঘুর আটক করা হয়েছিল, চীনে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের শিকার হয়েই তারা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ওই উইঘুরদের দাবি, তারা তুরস্কের নাগরিক। তাদের মধ্য থেকে ১৮১ জনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হলেও শতাধিককে পাঠানো হয়েছে চীনে। চীনের সরকারি সূত্র অনুযায়ী- গত বছর দেশটির মূল ভূমির চীনা পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ১০ কোটিরও বেশি, যারা বেড়ানোর জন্য দেশের বাইরে গিয়েছিলেন। অধিকাংশেরই গন্তব্য ছিল হংকং, ম্যাকাউ এবং তাইওয়ান।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*