ফিরে দেখা মুম্বই বিস্ফোরনের সেই ২২ বছর

mbihmজাতীয় ডেস্ক ।। ১৯৯৩-এর ধারাবাহিক মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২৫৭জন সাধারণ নাগরিকের, আহতের সংখ্যা সাতশোর বেশি। সেই মামলায় প্রথম দোষী সাব্যস্ত, বিস্ফোরণের অন্যতম মূল চক্রী টাইগার মেমনের ভাই ইয়াকুব আব্দুল রজাক মেমনের ৩০ জুলাই সকাল সাতটায় ফাঁসি হল নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে।দেশের ওপর আক্রমণ হওয়া কয়েকটি দুঃসাহসিক সন্ত্রাস হামলার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। এই সন্ত্রাস হামলার সঙ্গে অংশগ্রহণকারী ও চক্রী হিসেবে নাম জরিয়েছে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা সাকিল, টাইগার মেমনের মতো আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনেদের। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, এরা প্রত্যেকেই এখন লুকিয়ে রয়েছে পাকিস্তানে। সেই সন্ত্রাস হামলার পর কেটে গেছে বাইশ বছর।

ফিরে দেখা সেই বাইশ বছরঃ

মার্চ ১২, ১৯৯৩: পরপর তেরোটি ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বাণিজ্যনগরী মুম্বই। হামলায় প্রাণ গেল ২৫৭জন নাগরিকের, আহতের সংখ্যা ৭১৩।

• এপ্রিল ১৯: এই মামলার ১১৭ নম্বর অভিযুক্ত অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে গ্রেফতার করা হল।

• নভেম্বর ৪: দশ হাজার পাতার একটি প্রাথমিক চার্জশিট জমা দেওয়া হয় এই বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গে যুক্ত ১৮৯জনের বিরুদ্ধে। এরমধ্যে ছিল অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের নামও।

• নভেম্বর ১৯: মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হল।

• এপ্রিল ১, ১৯৯৪: বিশেষ টাডা আদালত আর্থার রোড সেন্ট্রাল জেলের ভিতর সরিয়ে দেওয়া হল। এই আদালতেই চলছিল বিস্ফোরণ মামলার শুনানি।

• এপ্রিল ১০, ১৯৯৫: টাডা আদালত এই মামলার সঙ্গে যুক্ত ২৬জন অভিযুক্তকে মুক্তি দিল। অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলতে থাকে।

• এরমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আরও দুজন অভিযুক্তকে মুক্তি দেয়। এরমধ্যে রয়েছে ট্র্যাভেল এজেন্ট আবু অসিম আজমি এবং আমজাদ মেহের বক্স।

• এপ্রিল ১৯: আদালতের বিচার প্রক্রিয়া শুরু

• এপ্রিল-জুন: অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।

• অক্টোবর ১৪:দেশের শীর্ষ আদালত জামিন দেয় সঞ্জয় দত্তকে।

• মার্চ ২৩, ১৯৯৬: বিচারপতি জেএন পটেল-কে হাইকোর্টের বিচারপতিতে উন্নত করা হয়।

• মার্চ ২৯:পিডি কোড়াকে বিশেষ টাডা আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

• ফেব্রুয়ারি ২০, ২০০৩: দাউদ ইব্রাহিমের গ্যাং-এর সদস্য ইজাজ পঠানকে আদালত প্রস্তুত করা হয়।

• মার্চ ২০, ২০০৩: মুস্তাফা দোসার শুনানি আলাদাভাবে শুরু হয়

• সেপ্টেম্বর ২০০৩: শুনানি শেষ

• জুন ১৩, ২০০৬: গ্যাংস্টার আবু সালেমের শুনানি আলাদাভাবে করার নির্দেশ

• অগাস্ট ১০: বিচারপতি পিডি কোড়া জানালেন শীঘ্রই এই মামলায় রায়দান হবে

• ১২ সেপ্টেম্বর: সুপ্রিম কোর্ট মেমন পরিবারের চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয়। এই মামলায় ১২ জন দোষীর মৃত্যুদণ্ড ও ২০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
• ১, নভেম্বর, ২০১২: সুপ্রিম কোর্ট সরকার ও ১০০ দোষীর আর্জির শুনানি শুরু করে।

• ২৯ আগস্ট, ২০১৩: সুপ্রিম কোর্ট আর্জিগুলি সম্পর্কে নির্দেশ স্থগিত রাখে।
• ২১ মার্চ, ২০১৩: ইয়াকুব মেমন, তার ভাই টাইগার মেমনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। ১০ দোষীর মৃত্যুদণ্ড মকুব করে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়।১৮ দোষীর মধ্যে ১৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল থাকে।
• মে, ২০১৪: রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ইয়াকুবের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন।
• ২ জুন, ২০১৪: ইয়াকুব দণ্ডাদেশ পর্যালোচনার জন্য পিটিশনের প্রকাশ্যে শুনানির যে আর্জি করেছিল তার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট তার দণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দেয়।
• ৯ এপ্রিল, ২০১৫: সুপ্রিম কোর্টে ইয়াকুবের দণ্ডাদেশ পর্যালোচনার আর্জি খারিজ হয়ে যায়।
• ২১ জুলাই, ২০১৫: সুপ্রিম কোর্ট ইয়াকুবের দণ্ড সংশোধনীর আর্জিও খারিজ হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টে। এটাই ছিল তার মৃত্যুদণ্ড মকুবের শেষ আইনি প্রক্রিয়া।
• ২১ জুলাই, ২০১৫: মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে ক্ষমার আর্জি ইয়াকুবের।
• ২৩ জুলাই, ২০১৫: ৩০ জুলাই নির্ধারিত দণ্ডাদেশ কার্যকর স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইয়াকুব।
• ২৭ জুলাই: ইয়াকুবের আর্জির ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। কিন্তু শুনানি ২৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায়।
• ২৮ জুলাই: সু্প্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ ভিন্নমত প্রকাশ করে। এরপরই ইয়াকুবের আর্জিটি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে পাঠানো হয়।
• ২৯ জুলাই: ইয়াকুবের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।
• ২৯ জুলাই: রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন করে ক্ষমা ভিক্ষা করে ইয়াকুব
• ২৯ জুলাই: মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল খারিজ করেন ইয়াকুবের ক্ষমার আর্জি। রাষ্ট্রপতিও তা খারিজ করে দেন।
• ৩০ জুলাই: দণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ চেয়ে নতুন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইয়াকুব। নজিরবিহীনভাবে গভীর রাতে ইয়াকুবের আর্জির শুনানি হয়। সেখানেও ইয়াকুবের আর্জি খারিজ হয়ে যায়।
• ৩০ জুলাই: সকাল সাতটায় ফাঁসি হয় ইয়াকুবের।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*