ফাঁসি হল মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার প্রথম দোষী সাব্যস্ত ইয়াকুবের

yaজাতীয় ডেস্ক ।। অবশেষে ফাঁসি হল মুম্বই বিস্ফোরণে দোষী ইয়াকুব মেমনের। সরকারিভাবে ঘোষণা করল নাগপুর জেল কর্তৃপক্ষ। আজ সকাল ৭টায় ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়। সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ফাঁসির প্রক্রিয়া শেষ হয়। ইয়াকুবের মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিত্সক। ফাঁসির পর দু মিনিট নীরবতাপালন করা হয়। ফাঁসির ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর।
ইয়াকুবের ফাঁসির সময় উপস্থিত ছিলেন জেলের ৬ জন আধিকারিক। আজ নাগপুর জেলেই দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয় । ময়নাতদন্তের পর দেহ নিতে নাগপুর জেলে পৌঁছন ইয়াকুবের দুই ভাই উসমান ও সুলেমান। তাঁদের হাতেই দেহ তুলে দেওয়া হয়।
এর পর বিমানে করে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। ফাঁসির পরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল নাগপুর বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর যাওয়ার পথেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। নাগপুর থেকে দেহ নিয়ে আসা হয় মুম্বইয়ে।
মুম্বই বিমানবন্দর থেকে মাহিমের বাড়িতে পৌঁছল ইয়াকুব মেমনের দেহ। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ মেরিন লাইনসের চন্দনবাড়িতে শেষকৃত্য।
এর আগে মেমনের ফাঁসি ঘিরে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে নজিরবিহীনভাবে রাতভর চলল সওয়াল-জবাব। শুনানির শুরুতেই ইয়াকুব মেমনের আইনজীবী আনন্দ গ্রোভর বলেন তাঁকে ১৪ দিন সময় দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবী পাল্টা বলেন, আবারও নতুন করে আর্জি বিচার ব্যবস্থার অপপ্রয়োগ। ইয়াকুবের আইনজীবী পাল্টা বলেন, এটা ইয়াকুবের আইনি অধিকার। এইভাবে দুপক্ষই নিজেদের দলিল পেশ করার পর ইয়াকুবের আইনজীবী বলেন রাত দশটায় রাষ্ট্রপতি ইয়াকুব মেমনের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করায় আইনি পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ পায়নি তার পরিবার। সেজন্য তাদের ১৪ দিন সময় দেওয়া হোক। ইয়াকুবের আর্জির শুনানি হল বিচারপতি দীপক মিশ্র, প্রফুল্ল চন্দ্র পন্ত ও অমিতাভ রায়ের বেঞ্চে। শুনানিতে ইয়াকুবের আইনজীবী এও বলেন সরকার ইয়াকুবকে ফাঁসি দিতে অনড়। পাল্টা ফাঁসির পক্ষে সওয়াল করে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতাগি বলেন, একবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করার পরও ফের এই একই আবেদন করার অর্থ হল, প্রক্রিয়াটিকে লম্বা টানার প্রয়াস। পাশাপাশি ইয়াকুবের আইনজীবী আরও বলেন রাষ্ট্রপতির ফয়সালার কপি তাঁরা এখনও হাতে পাননি। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য ইয়াকুবের আর্জি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল রাত ১০.৪৫-এ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যান প্রশান্ত ভূষণ, যুগ চৌধুরী, আনন্দ গ্রোভার, নিত্যা রামকৃষ্ণণ ও আরও এক আইনজীবী। ইয়াকুব মেমন মানসিক ভাবে অসুস্থ। সেজন্য তাঁর মৃত্যুদণ্ডের ওপর ১৪ দিনের জন্য স্থগিতাদেশের আর্জি জানান ইয়াকুবের আইনজীবীরা।
রাত ১১.২০-তে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে পৌঁছন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার।
রাত ১২.৩০-এ বিচারপতি দীপক মিশ্র, প্রফুল্ল চন্দ্র পন্ত ও অমিতাভ রায়ের বেঞ্চ গঠন করা
হয়। ঠিক হয়, সেই বেঞ্চেই শুনানি হবে ইয়াকুবের মৃত্যুদণ্ডের আর্জি।
রাত ১।সুপ্রিম কোর্টের সামনে সংবাদমাধ্যমের ভিড়।

রাত ১.৩০। ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখান বেশ কয়েকজন যুবক।
রাত ১.৩৫
রাত ২ টোয় সকাল সাতটাতেই ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি হবে বলে জানিয়ে তার পরিবারকে নোটিস পাঠায় নাগপুর জেল কর্তৃপক্ষ। নোটিস গ্রহণ করেন ইয়াকুবের ভাই সুলেমান।
রাত আড়াইটেয় খুলল সুপ্রিম কোর্টের দরজা। একে একে সর্বোচ্চ আদালতের ৪ নম্বর ঘরে প্রবেশ করলেন ৩ বিচারপতি ও ইয়াকুবের আইনজীবীরা।
রাত ৩.২০। ইয়াকুবের ফাঁসি ১৪ দিন পিছনোর আর্জির প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় শুনানি।
ভোর ৪.১৮। প্রায় এক ঘণ্টা পর শেষ হয় শুনানি।
ভোর ৪.৫০। ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি ১৪ দিন পিছনোর আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।
এরপরই ইয়াকুব মেমনের দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*