আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। প্রবল ঝড়ো বাতাস ও মুষলধারে বৃষ্টিসহ শক্তিশালী এক ঘূর্ণিঝড়ে শনিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা তাইওয়ান। এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যু, চারজনের নিখোঁজ এবং ৬৪ জনের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি এবং রয়টার্স জানিয়েছে, ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ লাখ বাড়িঘর।
শনিবার ভোরে টাইফুন সৌডলার দ্বীপদেশটির পূর্ব-উপকূলীয় ইলান ও হুয়ালিয়েনে আঘাত হানে। এ সময় সেখানকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকাগুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল এক হাজার মিলিমিটার এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় দুইশ’ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়া অবকাঠামো প্রচণ্ড বাতাসে উড়ে যাওয়ার সময় সেগুলোর আঘাতে দু’জন নিহত হয়েছে। তাইওয়ান প্রশাসন বন্যা এবং ভূমিধসের আশঙ্কায় সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়টি প্রশান্ত মহাসাগরে পৌঁছানোর পরপরই হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয় এবং আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে উদ্ধার অভিযানের জন্য সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। ট্রপিক্যাল স্টর্ম রিস্ক ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, শনিবার ঘূর্ণিঝড়টি ‘ক্যাটাগরি ২’-তে নেমে এসেছে। দিনশেষে এটি ‘ক্যাটাগরি-১’-এ নেমে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কতোটা শক্তিশালী, তা নির্দেশ করা হয় ১ থেকে ৫-এর স্কেলে বিভিন্ন ধাপের মাধ্যমে।
২০০৯ সালের টাইফুল মোরাকট নামের ঘূর্ণিঝড়টির সাথে তুলনা করা হচ্ছে সৌডলারের। ছয় বছর আগের ওই ঝড়টি দক্ষিণ তাইওয়ানের বিশাল এলাকাজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল, নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিল সাত শতাধিক মানুষ এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তিন হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ। ধারণা করা হচ্ছে- শনিবার দিনের মাঝামাঝি সময়ে তাইওয়ান অতিক্রম করবে সৌডলার, পাড়ি দেবে তাইওয়ান প্রণালী এবং চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের আঘাত হানবে। চীনের ওই অঞ্চলের উপকূল থেকে এরই মধ্যে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, বছরের এই সময়ে দক্ষিণ চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘূর্ণিঝড়প্রবণ হয়ে ওঠে।