আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। তাইওয়ানে আঘাত হানার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে রোববার চীন অতিক্রম করছে টাইফুন সৌডলার। তাইওয়ানে ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে নিহত হয়েছে অন্তত ছয়জন এবং বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে, সৌডলারের আঘাতে চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ফুজিয়ান প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং সড়কে দুই ফুট পর্যন্ত পানি জমে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। প্রদেশটির উপকূলে ঝড়টি আঘাত হানার আগেই পূর্বসতর্কতা হিসেবে ফুজিয়ান ও ঝেজিয়াং থেকে আড়াই লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঝড়ের কারণে পূর্ব উপকূলের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং শস্যের ক্ষতি হয়েছে। চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, রোববার রাত নাগাদ ঝড়টি আরো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ঝড়টির আঘাতে তাইওয়ানে অসংখ্য গাছপালা শিকড় উপড়ে পড়েছে এবং ভূমিধসের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ভেঙে পড়া গাছপালা ও বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড-সাইনবোর্ডের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৪০ লাখ ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন হয়ে পড়েছে। ঝড়ে দেশটিতে অন্তত ৩৭৯ জন আহত হয়েছে। বর্তমানে তাইওয়ানে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা না থাকলেও আবহাওয়া অধিদপ্তর দক্ষিণাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে।
শনিবার ভোরে টাইফুন সৌডলার দ্বীপদেশটির পূর্ব-উপকূলীয় ইলান ও হুয়ালিয়েনে আঘাত হানে। এ সময় সেখানকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকাগুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল এক হাজার মিলিমিটার এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় দুইশ’ কিলোমিটার।
ট্রপিক্যাল স্টর্ম রিস্ক ওয়েবসাইটে শনিবারই ঘূর্ণিঝড়টির ‘ক্যাটাগরি ২’-তে নেমে আসার কথা জানানো হয়েছিল। দিনশেষে এটি ‘ক্যাটাগরি-১’-এ নেমে যায়। ঘূর্ণিঝড় কতোটা শক্তিশালী, তা নির্দেশ করা হয় ১ থেকে ৫-এর স্কেলে বিভিন্ন ধাপের মাধ্যমে।
২০০৯ সালের টাইফুল মোরাকট নামের ঘূর্ণিঝড়টির সাথে তুলনা করা হচ্ছে সৌডলারের। ছয় বছর আগের ওই ঝড়টি দক্ষিণ তাইওয়ানের বিশাল এলাকাজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল, নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিল সাত শতাধিক মানুষ এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তিন হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ।
প্রসঙ্গত, বছরের এই সময়ে দক্ষিণ চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘূর্ণিঝড়প্রবণ হয়ে ওঠে।