গোপাল সিং, খোয়াই, ২১ আগষ্ট ।। পৃথিবীর বুকে সংবাদ সংগ্রহকারীদের বিরুদ্ধে বার বার আঘাত হানা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক হত্যা, ব্লগার হত্যার মতো ঘটনায় পৃথিবী জুড়ে সমালোচনার ঢেউ। তীব্র আন্দোলন শাণিত হচ্ছে গনতন্ত্রে আঘাত হননকারী ঐ দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। কিন্তু যদি খুদ প্রশাসনই কলমের শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করে, তবে সেই আন্দোলন হবে কার বিরুদ্ধে?
অন্তত শুক্রবারের ঘটনায় এই প্রশ্নটাই বারে বারে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে সাংবাদিকদের। প্রশাসনের একদম শীর্ষে আসীন উচ্চপদস্থ কর্তাই যদি দুর্ব্যাবহারের হাতিয়ার এর আশ্রয় নিয়ে সংবাদ জগতকে আক্রমন করেন তবে সাধারন মানুষ কোথায় যাবেন, কাদের ভরসায় থাকবেন?
শুক্রবার ঘটনার সূত্রপাত একটি সংবাদ সংগ্রহকে নিয়ে। খোয়াই এর সিনিয়র ডেপুটি মেজিস্ট্রেট কর্তৃক সোশাল মিডিয়াতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও নারীদের নিয়ে এবং সংবাদপত্র সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যকে ঘিরে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দল ডেপুটেশন দিতে গেলে বাধে বিপত্তি। খোয়াই জেলা শাসক এন.ডার্লং এর নিকট ডেপুটেশন দেবার কথা থাকলেও, জেলা শাসকের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা শাসক সন্তোষ কর্মকার এর নিকট ডেপুটেশনে মিলিত হয় ঐ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। এই সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা শাসক সন্তোষ কর্মকার কর্তৃক নিগৃহীত হতে হয় সাংবাদিকদের। গোপাল সিং, আশীষ চক্রবর্তী ও দ্বীপাঞ্জন ভট্টাচার্য্য্, যারা রাজ্যের বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ প্রতিনিধি, তাদের সবাইকে অসম্মান প্রদর্শন করে সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেন এবং বেরিয়ে যেতে বলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক সন্তোষ কর্মকার। তিনি প্রচন্ড খারাপ ব্যবহার করেন সাংবাদিক ও ডেপুটেশনকারী প্রতিনিধিদের সাথে। খোয়াইয়ের বুকে এধরনের ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ’র বাক রুদ্ধ করার প্রয়াস খোয়াইতে কখনও হয়নি। তাও আবার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তার দ্বারা। তিনি অত্যন্ত জঘন্যভাবে সাংবাদিকদের বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি কাউকে পাত্তা দিতে রাজি নন। তিনি যা বলবেন তাই নাকি হবে! এভাবেই সাংবাদিকদের অসম্মান করেন এবং সরাসরি বেরিয়ে যেতে বলেন। যা ভিডিও ফুটেজে বন্দী হয়ে আছে। গোটা ঘটনা জানাজানি হতেই জেলা শাসকের অফিসে ছুটে আসেন অন্যান্য সাংবাদিকরা। উক্ত ঘটনার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খুদ জেলা শাসক অফিসের কর্মীরাই। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সকল সাংবাদিকরাই।