৫ লাখ শরণার্থী নেবে জার্মানি

intআন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। এক বছরে পাঁচ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে জার্মানি। তবে যুদ্ধকবলিত দেশগুলো থেকে আসা এ শরণার্থীদের স্থায়ী নয়, কয়েক বছরের জন্য তাদের আশ্রয় দেবে দেশটি। মঙ্গলবার জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে ইউরোপে আসা দেড় লাখ শরণার্থীকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আশ্রয় দেবে- এমন ঘোষণার পর গ্যাব্রিয়েল এমন ইঙ্গিত দিলেন। ইইউয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছরে ইউরোপে আসা শরণার্থীর সংখ্যা আট লাখের বেশি হতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় চার গুন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর জন্য নতুন করে কোটা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। এর ফলে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ঠাঁই হবে আরো ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থীর। এর আগে ৪০ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ইইউ।
ইতিমধ্যে গত দুই দিনে প্রায় ২০ হাজার শরণার্থী জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছে। আরো ১১ হাজারের মতো গতকাল সোমবারই আসার কথা ছিল। শরণার্থীদের গ্রহণে ইইউ-এর কোটা পদ্ধতি মেনে চলার বিষয়টি পুনর্ব্যক্তও করেছেন জার্মানি ভাইস চ্যান্সেলর।
ইইউর একটি সূত্র জানায়, আগামী বুধবার ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জাংকার শরণার্থীদের আশ্রয়-সংক্রান্ত এ নতুন প্রস্তাব প্রকাশ করবেন। প্রস্তাব অনুযায়ী জার্মানিকে আরো ৩১ হাজারের বেশি শরণার্থী গ্রহণ করতে হবে। আর ফ্রান্সকে নিতে হবে ২৪ হাজার ৩১ জন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ গতকালই ঘোষণা দিয়েছেন, দুই বছরে তার দেশ ২৪ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে।
চাপের মুখে অবশ্য শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, পাঁচ বছরে ২০ হাজার সিরীয় শরণার্থী নেবে তার দেশ।
ক্যামেরন রোববার বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিচ্ছি, এই পার্লামেন্টের মেয়াদকালে যুক্তরাজ্যকে ২০ হাজার শরণার্থীকে পুনর্বাসন করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পথে ইইউতে প্রবেশ করা শরণার্থীরা এই সুযোগ পাবে না। বরং জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কের শিবিরগুলোতে থাকা সিরীয় শরণার্থীদের যুক্তরাজ্যে পুনর্বাসন করা হবে।’
এদিকে কানাডার কুইবেক প্রদেশ ৩ হাজার ৬৫০ জন সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। প্রদেশটির অভিবাসনমন্ত্রী কাথলিন ওয়েল গতকাল এ কথা জানান। তবে শরণার্থীদের বিষয়ে সব সময় কঠোর বলে পরিচিত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান নিজের দেশে কোনো শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। ইইউভুক্ত দেশগুলোর সীমান্ত নিরাপদ না করা পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো আলোচনায় বসতেও রাজি নন তিনি। মূলত তিনি তুরস্ককে এসব শরণার্থী গ্রহণের বিনিময়ে দেশটিকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য ইইউর প্রতি আহ্বান জানান।
ওরবানের সুরেই সুর মিলিয়েছেন ইইউ-এর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। সোমবার ব্রাসেলসের একটি অনুষ্ঠানে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ কবলিত দেশগুলো থেকে আসা শরণার্থীরা ইউরোপকে মারাত্মক সংকটে ফেলেছে। এ সমস্যা আরো কয়েক বছর ধরে চলবে। এটাকে একটি ঘটনা হিসেবে না নিয়ে সমস্যা হিসেবে দেখার ওপর মত দিয়েছেন।
শরণার্থীদের ব্যাপারে কঠোর নীতিতে বিশ্বাসী ইউরোপের আরেক দেশ গ্রিস। দেশটির এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, তুরস্কের উপকূল থেকে প্রায় ২০ হাজার অভিবাসী গ্রিস নিয়ন্ত্রাধীন লেসবস দ্বীপে আসার চেষ্টা করছে।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*