গোপাল সিং, খোয়াই, ২৬ নভেম্বর ।। খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে এক আসামী পলাতক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে খোয়াইতে ব্যাপক চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক ১২টা নাগাদ ঘটনা। খোয়াই জেলা হাসপাতালের চারদিক তখন প্রচুর জনসমাগমে ঘিরা। সেই সাথে হাসপাতাল চত্বরেও গাড়ী চালকদের উপস্থিতি ছিল। আশে-পাশে প্রচুর দোকানী রয়েছে। অথচ খোয়াই সুভাষপার্ক আউটপোষ্ট থেকে জামাই আদরে সোনামুড়া নিবাসী বাচ্চু মিঞা নামে অভিযুক্ত চোরকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের বহি:বিভাগে ১২টা নাগাদ রক্ত পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বাচ্চু মিঞাকে। তারপর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি তখন প্রসুতি বিভাগে থাকায় অল্প বিলম্ব হয়। এই বিলম্বকেই সুযোগ হিসাবে বেছে নেয় বাচ্চু মিঞা। কারন তখন আউট পোষ্ট ইনচার্জ চোরকে হাসপাতালে রেখেই গাড়ী থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ আনতে যান। কিন্তু সেই সুযোগে হাসপাতালের পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায় বাচ্চু মিঞা নামে ঐ দাগী চোর। অথচ হাসপাতালের চারদিক বাউন্ডারি ওয়ালে ঘেরা। পাশে জনবসতী। সঙ্গে সঙ্গেই যদি পুলিশ দৌড়-ঝাঁপ শুরু করার পাশাপাশি চিৎকার-চেচামেচি করতেন তবে হয়তো উপস্থিত জনতা সেই চোরকে ধাওয়া করতে পারতেন কিংবা পাকড়াও করতে পারতেন। কিন্তু আশ্চর্য্যজনক হলেও সত্যি পুলিশ ঘটনার ৩০ মিনিট পর তৎপরতা শুরু করে। আর তাতেই জনমনে গুঞ্জনের সৃষ্টি হতে থাকে। কেউ কেউ বলতে শুরু করেন এ কোন নাটক মঞ্চস্ত করলেন নাতো পুলিশ বাবুরা। কারন বাংলায় প্রবাদ আছে চোরে-পুলিশে মাসতুতু ভাই। হলোটাও তো তাই। প্রবাদটা যেন আক্ষরিক অর্থে বাস্তব রূপ নিয়ে নিল। অথচ দাগী চোর বাচ্চু মিঞার কাছ থেকে ৫-৬টি মোবাইল এবং নগদ কয়েক হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে বাচ্চু মিঞার পালিয়ে যাওয়া নিয়েও ব্যাপক গুঞ্জন ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে খোয়াইতে।
চাঞ্চল্য সৃষ্টি হবার পেছনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কারন। সোনামুড়া নিবাসী দাগী চোর বাচ্চু মিঞার অপর মহিলা সঙ্গী আটক রয়েছে এখনো। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ টাকা সহ অনেকগুলো মোবাইল। তবে কি কোন উগ্রবাদী সংগঠনের লোক এই বাচ্চু মিঞা? সে কি আইএসআইএস জঙ্গী সংগঠনের লোক? এমনই গুরুতর প্রশ্ন তুলছেন খোয়াইবাসী। তবে জনসাধারনের এই সন্দেহ কিন্তু নিছক সন্দেহ বলেই খারিজ করে দেওয়ার উপক্রম নেই।
এমনও গুঞ্জন রয়েছে তবে কি বাচ্চু মিঞা বাংলাদেশ পারি দেবে? নাকি বাংলাদেশ থেকে খোয়াই হয়ে অন্য কোন রাজ্যে পারি দেবে সে? আইএসআইএস এর মতো জঙ্গী সংগঠনের ভয়ানক সমস্যা যেখানে পৃথিবী জুড়ে, সেখানে সারা ভারতও কিন্তু যথেষ্ট সতর্ক। কিন্তু এর মধ্যে খোয়াই থানা বাবুদের এমন গাফিলতিতে বাগে পেয়েও এভাবে একটি দাগী চোর হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ায় আবারো খোয়াই পুলিশ প্রশাসন কিন্তু কাঠগড়ায়! হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চোরকে মদত দিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগও তুলছেন জনসাধারন। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য খোয়াইতে।