জাতীয় ডেস্ক ।। ভূমিকম্পে মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে অন্তত ছয়জন ও আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে দুইজন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। বাংলাদেশ ও নেপালেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে মণিপুরের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক ভবনের ছাদ ধসে পড়েছে। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে তামেংলং জেলার ননি গ্রাম ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মনিপুরের ইম্ফল থেকে ২৯ কিলোমিটার পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব উত্তর-পূর্বে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি।
টু্ইটারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ বাহিনীকে গুয়াহাটি থেকে ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অগ্রসর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ও একটি টুইট বার্তায় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি উত্তরাঞ্চলের ভূমিকম্পের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নাবাম তুকির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন।
ভূমিকম্পের পরপরই মোদি আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এক টুইটে মোদি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাজনাথ বর্তমানে আসামে অবস্থান করছেন। সেখানে বসেই তিনি যেন এটা মনিটরিং করেন। আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দুর্যোগ প্রতিরোধ ইউনিটের বেশ কয়েকটি দল ইম্ফলে এসেছেন। মণিপুর ছাড়াও আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেখানকার কিছু বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, সেখানকার অনেক ভবন ধসে পড়েছে। সঙ্গে ভবন ধসের ছবিও দিয়েছেন তারা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইম্ফলের বিখ্যাত নারীদের মার্কেট ধসে পড়েছে। পূর্তমন্ত্রী রতন খুমুজাম বলেছেন, তিনি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার চেষ্টা করছেন। ইম্ফল থেকে সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু বাড়িঘর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও বাড়ি থেকে অনেকে নিরাপদে বের হতে পেরেছেন। ইম্ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর মধ্যে কয়েকটি হাসপাতালও রয়েছে বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে প্রায়ই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ওই অঞ্চলকে বিবেচনা করা হয় বিশ্বের ষষ্ঠ ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা হিসেবে।