আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের চারসাদ্দা শহরের বাচা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। সেখানে এখনও তুমুল বন্দুকযুদ্ধ চলছে। বন্দুক হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জন নিহতের খবর দিয়েছে দেশটির উদ্ধারকারী সংস্থা ইদহি। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, নিহতের সংখ্যা এর চেয়ে আরও অনকে বেশি, যেটা ৬০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলির পাশাপাশি প্রচণ্ড শব্দে বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজও পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডন জানিয়েছে, বাচা খানের (যার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়) মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্কুলের সামনে কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সময় এ হামলা চালানো হয়। ইদহির উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, তারা অন্তত ১৫ জনের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পড়ে থাকতে দেখেছেন। পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, হামলায় একজন অধ্যাপক ও শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে আসা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, অন্তত তিন থেকে চারজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। স্কুলের প্রবেশ মুখে হামলাকারীরা অবস্থান নেয়। তিনজন হামলাকারীকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে গুলি ছুঁড়তে দেখেছেন তিনি। ডিআইজি সাঈদ ওয়াজির জানিয়েছেন, দুই হামলাকারীকে হত্যা করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে এখনও স্কুলের ভেতর প্রবেশ করছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু কিছু বন্দুকধারী মুক্তভাবেই ভেতরে অবস্থান করছে। তবে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামলাকারী চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছেছে। তারাও অভিযানে শামিল হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এখনও স্কুলের ভেতর আট থেকে ১০ সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সাংবাদিকরা স্কুলের বাইরে জটলা করে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সেখান থেকে নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ২০টির বেশি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেখা গেছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া অ্যাসেম্বলির সদস্য আরশাদ আলী জানান, হামলাকারীরা দেয়াল টপকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করে এবং নির্বিচারে গুলি চালায়। উদ্ধার হওয়া আহত এক শিক্ষার্থী উদ্ধারকারীদের জানিয়েছেন, ৬০ থেকে ৭০ শিক্ষার্থীর মাথায় গুলি করেছে হামলাকারীরা।
উদ্ধারকারী সূত্রের দাবি, এ হামলা ২০১৪ সালে ১৬ ডিসেম্বর পেশোয়ারের একটি সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে হামলার পৃনরাবৃত্তি। তবে তাদের ওই দাবি নিরপেক্ষ সূত্র থেকে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পেশোয়ারের ওই হামলায় ১৪০ জন নিহত হন যাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর তিনটি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টিভি চারসাদ্দার ডিএসপির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তিনজন বন্দুকধারী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা এক ছাত্রী টেলিফোনে ডনকে জানান, প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। তিনিসহ অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সাহায্য চেয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।