আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। ভয়াবহ তুষারঝড়ে অচল হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে সাড়ে আট কোটি মানুষের কর্মজীবনে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। কিছু এলাকায় ৪০ ইঞ্চি তুষারপাত হয়েছে। ১১ অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তুষারঝড়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে নিউইয়র্ক। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধের পাশাপাশি যানবাহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে শহরটিতে। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলীয় এলাকা তুষারপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশটির ২০টি অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ তুষারঝড় আঘাত হেনেছে।
রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে ভারি তুষারপাতের কারণে ১৮ জন মারা গেছেন। এর বেশিরভাগ ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। শনিবারে কেন্টাকি ও পেনিসিলভানিয়ার ১০ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। পাশাপাশি ১২ ঘণ্টা ধরে যানজটে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। রাস্তা তুষারপাতে ছেয়ে যাওয়ায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়। নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও বলেছেন, এই তুষারঝড় এখানকার সবচেয়ে ভয়াবহ পাঁচটি শীতকালীন ঝড়ের একটিতে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে শহরে ২৮ ইঞ্চির বেশি তুষারপাত হতে পারে। নিউইয়র্কে সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৯ ইঞ্চি তুষারপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ২০০৬ সালে। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, তুষারঝড়ের প্রভাবে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রুকলিন ও কুইন্স আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় শনিবার সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। জনসাধারণের জন্য সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। শুধু জরুরি মেরামত কাজের জন্য নিয়োজিত গাড়ি নিউইয়র্কের রাস্তায় চলাচল করতে পারবে। এর বাইরে কেউ গাড়ি নিয়ে বের হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
খবরে আরও বলা হয়, স্থানীয় সময় রোববার ওয়াশিংটন অতিক্রম করবে তুষারঝড়, সে সময় নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী রেকর্ড ২৯ দশমিক ৯২ ইঞ্চি তুষারের চাদরে চাপা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিভাগ। ১৯২২ সালে ওয়াশিংটনে প্রায় ২৮ দশমিক ১১ ইঞ্চি বরফ জমেছিল, তা ছিল এযাবৎকালের রেকর্ড। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র ম্যুরিয়েল ই বাউসার বলেছেন, জনজীবনের জন্যে মারাত্মক হুমকিস্বরূপ এ তুষারঝড়ের কারণে রাজধানীর সব রেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার ভোর পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। শহরে রোববার পর্যন্ত সব ধরনের বিমানের ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অবকাশযাপনের ৭০০সহ শুধুমাত্র শনিবারই দেশটির পূর্বাঞ্চলের ৪ হাজার ৩০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। মেরিল্যান্ডের গভর্নর ল্যারি হগ্যান বলেন, ‘৯০ বছরের মধ্যে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ এলাকার মানুষ দেখেনি। ১৯২২ সালের পর এটি হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক তুষারঝড়।’