স্বাস্থ্য ও সচেতনতা ডেস্ক ।। নানা কারণেই ভারতে সন্তান নিতে অক্ষম দম্পতির সংখ্যা অল্প নয়। তাদের জন্য ফার্টিলিটি ক্লিনিক আছে। আবার ভারতের বিভিন্ন শহরে তৈরি করা হয়েছে শুক্রাণু ব্যাংক। দম্পতিরা সেখান থেকে কিনতে পারেন শুক্রাণু। তবে সম্প্রতি ভারতে বেড়েছে শুক্রাণুর দাম। এক ভায়াল (শিশি) শুক্রাণুর বাজার দর বর্তমানে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। কয়েকবছর আগেও এক হাজার দুই শত থেকে এক হাজার পাঁচশত টাকাতে সেটি পাওয়া যেত। ডাক্তারেরা বলছেন খুব শিগগিরই এক ভায়াল শুক্রাণুর দাম ১০ হাজার টাকা ছাড়াবে। শুধু ভারতে না, যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়ছে শুক্রাণুর দাম। আমেরিকান দম্পতিদের এখন শুক্রাণু কিনতে হলে খরচ করতে হয় ৩৭০ থেকে ৮৯০ ডলার। অথচ কয়েক বছর আগে খু্ব ভালমানের শুক্রাণু ২০০ ডলারেই তারা কিনতে পারত।
ভারতের ক্লিনিকগুলোতে পেশাদার শুক্রাণুদাতা রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নজরদারি না থাকায় ক্লিনিকভেদে শুক্রাণুর দাম ভিন্ন। এক ভায়াল শুক্রাণু নিষেক প্রক্রিয়ার একটি চক্রে শুধু ব্যবহার করা যায়। সাধারণত গর্ভধারণ করতে দুই বা তিনটি চক্র লেগে যায়। সেক্ষেত্রে গর্ভধারণ পর্যন্ত শুক্রাণু কেনার খরচ ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লেগে যায়। আর দাতাদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রিধারীদের চাহিদা বেশি।
দক্ষিণ দিল্লির একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকের চিকিৎসক রিতা বকশী। তিনি জানান, তারা খুব তাড়াতাড়ি এক ভায়াল শুক্রাণুর দাম ১০ হাজার টাকা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরা শিগগিরই শুক্রাণুর উর্বরতা ও জিনগত পরীক্ষা শুরু করব। এ জন্য খরচ বাড়বে।’ এ ধরনের ক্লিনিকগুলো শুক্রাণু ব্যাংক থেকে পরীক্ষিত শুক্রাণু কিনে ও সংরক্ষণ করে। দেশেতে শুক্রাণুর দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে- ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে শুকাণু সংগ্রহের পর বেশ কিছু পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সি, ডায়াবেটিকস, ব্লাড প্রেসার, থ্যালাসেমিয়া প্রভৃতি পরীক্ষা করানোর পরই দাতাদের কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে ব্যাংকে রাখা হয়। আর শুক্রাণু ব্যাংকে রাখা নমুনা কয়েকমাসের ব্যবধানে আবার পরীক্ষা করতে হয়।
আবার দম্পতিদের নিজস্ব চাহিদা ও রুচির কারণেও দাম বাড়ছে শুক্রাণুর। ডাক্তারেরা শুক্রাণুর ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একাধিক শুক্রাণুর নমুনা নিয়ে ককটেল বানাতে পারেন। আবার অনেক দম্পতি- জন্ম নেওয়া সন্তানের উচ্চতা ৬ ফুট বা তার বেশি হবে কিনা কিংবা আইটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) পড়ার বুদ্ধিসম্পন্ন হবে কিনা- এ ধরনের পরীক্ষা করাতে চায়। তবে, ভারতের প্রান্তিক শহরগুলোতে আবার দম্পতিদের চাহিদা খুব স্বল্প। তারা সন্তানটি সুস্থ হয়ে জন্ম নিক আর সুস্থ থাকুক শুধু এটাই চান।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া