গোপাল সিং, খোয়াই, ১৬ আগষ্ট ।। স্কুলের জাতীয় পতাকা নামাতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু উত্তর রামচন্দ্রঘাট হাই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মেনে সোমবার বিকেল ৪টা নাগাদ ছাত্রটি জাতীয় পতাকা নামাতে যায়। কিন্তু জাতীয় পতাকা যে বাঁশে লাগানো হয় তার উচ্চতা বেশী হওয়ায় ৩৩০০ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের সংস্পর্শে এসে যায় অমরজিৎ শীল নামে ঐ ছাত্রটি। কারন বিদ্যালয়ের ঠিক উপর দিয়েই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে ৩৩০০ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহী তার। উত্তর রামচন্দ্রঘাট হাই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত অমরজিৎ শীলের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষজন। বাকরুদ্ধ পিতা রঞ্জিত শীল। কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। একমাত্র ছেলের মৃত্যুকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা মৃতের মাতা-পিতা।
সোমবার সকালেও স্কুলে গিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে অমরজিৎ। বিদ্যালয়ের পাশেই তার বাড়ী হওয়ায় বিকেলে যথা সময়ে জাতীয় পতাকা নামানোর দায়িত্বভার পড়ে অমরজিতের ওপর। তাছাড়া বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র হিসাবে অমরজিতের প্রভাব রয়েছে স্কুলে। তাই এই গুরু দায়িত্বে পেয়ে আপ্লুত ছিল সে। কিন্তু গুরু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শেষে নিজের প্রাণটাই যে বিসর্জন দিতে হবে তা কি আর জানা ছিল অমরজিৎ-এর। তবে তার পরিবারের লোকজন কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাত দেববর্মার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রশ্ন উঠছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ নিয়েও। একটি স্কুলের ওপর দিয়ে ৩৩০০ কেভি’র মতো উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী তার বিপজ্জনকভাবে থাকার পরও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য এত উঁচু বাঁশ লাগানো কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল, প্রশ্ন অভিভাবকদের। তারপরও কেন এই ঝুঁকিসম্পন্ন কাজে একটি ৯ম শ্রেনীর ছাত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়েও ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ নিয়েও। মেধাবী ছাত্র অমরজিৎ শীলের মৃত্যুর খবর পেয়েও কোন শিক্ষকই হাসপাতালের দিকে পা মাড়াননি। এমনকি মৃতের মাতা-পিতাকে একটু সমবেদনা জানাতেও এগিয়ে আসেননি। এছাড়া শিক্ষা দপ্তর, বিদ্যুৎ দপ্তরের চরম উদানীসতায় একজন মায়ের বুক খালি হয়ে গেল তাতেও কি টনক নড়বে না সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির? জনগন এর বিহিত চাইছেন।