আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ এপ্রিল || ২০২৫ সালের ১৫ই এপ্রিল, আগরতলার তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কব্যলোকের উদ্যোগে পালিত হলো ২৭’তম বাংলা নববর্ষ। ত্রিপুরার অন্যতম খ্যাতনামা সমাজ-সাংস্কৃতিক সংগঠন কব্যলোকের আয়োজনে এদিনের অনুষ্ঠান পরিণত হয় এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক মিলনমেলায়। দুই দিনব্যাপী এই উৎসবে ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৪৫০ জন শিল্পী অংশগ্রহণ করেন, যা বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যকে তুলে ধরে।
এই অনুষ্ঠানটি ত্রিপুরা সরকারের তথ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তর এবং পশ্চিমবঙ্গের পূবাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই রাজ্যের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং শিল্পী-সংস্কৃতিপ্রেমীদের মিলনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের মর্যাদা বাড়ান। মঞ্চে তাঁকে সম্মানিতভাবে বরণ করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে কব্যলোকের সাংস্কৃতিক অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সংগঠনের নিরলস প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানান। ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রতিভাবান শিল্পীদের কাজের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতা কব্যলোকের মতো সংগঠনের হাত ধরেই জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ত্রিপুরার খ্যাতনামা চলচ্চিত্র প্রযোজক, সমাজকর্মী ও সফল ব্যবসায়ী রতন সাহাকে সংবর্ধনা প্রদান। তাঁর অনবদ্য সাংস্কৃতিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কব্যলোকের সভাপতি শ্রী শান্তনু দাস ও সম্পাদক শ্রী উত্তম চক্রবর্তী সম্মাননাপত্র ও স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে ছিল নাটক, সংগীত ও লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন। গৌতম হালদারের নাট্য পরিবেশনা, শান্তিনিকেতন থেকে আগত বাউল গানের দল এবং আগরতলার নারীবাহিত ব্যান্ড ‘মেঘবালিকা’র সংগীত পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়ে এবং ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে স্বাগত জানিয়ে এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে বাংলা সংস্কৃতির এক বর্ণময় উদ্যাপন। অনুষ্ঠান শেষে সকল অংশগ্রহণকারী ও দর্শকরা তাঁদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং আগামী বছরের উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি, সম্মাননা প্রদান ও শিল্পীদের আন্তরিক পরিবেশনা—সব মিলিয়ে এই নববর্ষ উৎসব ছিল এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।