ত্রিপুরায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জরুরি বৈঠক, নেওয়া হলো কঠোর কর্মপরিকল্পনা

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ এপ্রিল || সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান গ্রাফ মোকাবিলায় ত্রিপুরার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ বুধবার সোনারতরি গেস্ট হাউসে এক জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেন। যেখানে সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। বিধায়ক তথা আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার এবং পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসক ড. বিশাল কুমারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। গত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২২% বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষত মোটরসাইকেল সংক্রান্ত ঘটনায়। বৈঠকে চিহ্নিত প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে বেপরোয়া গতি (৩৮% দুর্ঘটনার কারণ), প্রধান সড়কগুলোর ৪৭% পিক আওয়ারায় অবৈধ পার্কিং এবং ৬৮% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে ফুটপাথের অভাব।
এদিন চার সূচক কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়: বিশেষ ট্রাফিক টাস্ক ফোর্স গঠন, জুলাইয়ের মধ্যে ১২টি সংকটপূর্ণ মোড়ে ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু, ১২০টি স্কুলে সড়ক নিরাপত্তা পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্তি এবং বারংবার ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান।
এদিন মেয়র দীপক মজুমদার “নিরবচ্ছিন্ন, বহু-সংস্থার সমন্বয়”-এর ওপর জোর দেন।
অন্যদিকে ড. কুমার ঘোষণা করেন উচ্চঝুঁকিপূর্ণ সময়ে ২৫% অতিরিক্ত ট্রাফিক কর্মী মোতায়েনের পরিকল্পনার কথা। এই কৌশলের লক্ষ্য আগামী ছয় মাসের মধ্যে দুর্ঘটনা ৩০% কমানো, যার জন্য ৫০টি নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, ১ লক্ষ বাসিন্দাকে নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি এবং ৮.৫ কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।
সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব বিশেষভাবে যুব সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব দেন, যার অংশ হিসেবে কলেজগুলোতে ২০০ জন “রোড সেফটি ইয়ূথ অ্যাম্বাসেডর” নিয়োগের কথা বলেন। ১৫ই জুলাইয়ের জন্য পরবর্তী পর্যালোচনা সভা নির্ধারিত হয়েছে, যদিও কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়েছে যে এসব পদক্ষেপের সাফল্য সমানভাবে নির্ভর করবে কঠোর প্রয়োগ এবং নাগরিকদের সচেতনতার উপর।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*