খোয়াইয়ের লালছড়া ঘোষপাড়ায় তিন মাসের শিশু কন্যার অস্বাভাবিক মৃত্যু

mrittuগোপাল সিং, খোয়াই, ১২ নভেম্বর ।। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা। নিত্যদিনের মতোই ঘুম থেকে উঠে মাত্র ৩ মাসের শিশু কন্যাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান খোয়াই লালছড়া নিবাসী এক দম্পত্তি। মৃত শিশু কন্যাটির নাম দীপিকা গোপ। পিতা অজয় গোপ, পেশায় শ্রমিক। তিনি প্রায়শ:ই মদমত্ত অবস্থায় থাকেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীদের। কিন্তু আশ্চর্য্য্যজনক অবস্থায় শিশুটিকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। সকাল ৭টা নাগাদ শিশুটিকে হাসপাতালমুখী করা হয়। খোয়াই জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। কিন্তু পুলিশকে না জানিয়েই কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু কন্যার মৃতদেহ তুলে দেন পরিবারের হাতে। চিকিৎসকের এহেন ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। নিয়ম অনুযায়ী একজন সরকারী চিকিৎসককে এই ঘটনার জন্য পুলিশ ডাকা ওনার কর্তব্যের মধ্যে থাকলেও ঐ চিকিৎসক তা করেন নি। তারপর হাসপাতাল থেকে শিশুর মৃতদেহ বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু ৩ মাসের শিশুকন্যার মৃত্যু নিয়ে এদিন খোয়াই লালছড়া ঘোষপাড়ায় ধুন্দুমার কান্ড ঘটে যায়। মৃত শিশু কন্যার পিতার মদমত্ত থাকার কারনকে সামনে রেখে, নিজের মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে খুদ প্রতিবেশী এবং একাংশ এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে চড়াও হয় অজয় গোপের উপর। বেধরক মারধর করা হয় তাকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বুধবার রাতে মদমত্ত অবস্থায় অজয় তার স্ত্রীকে মারধর করেছে। তাই এলাকাবাসীর সন্দেহ ক্রোধের বশে অজয়ই তার শিশু কন্যাকে খুন করেছে। যদিও এখনও ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার বাকি। শিশু কন্যা দীপিকার মৃত্যুর প্রকৃত কারন এখনো সামনে আসার বাকি। কিন্তু কেন এলাকাবাসী সন্দেহমূলক মৃত শিশুর অসহায় পিতার উপর এককাট্টা হয়ে চড়াও হলো, এখনো তা পরিস্কার নয়। প্রতিবেশীদের সাথে ভাব না থাকাটাই কি এর মূল কারন? এমনই গুঞ্জন এখন গোটা খোয়াই জুড়ে। অপরদিকে অসহায় পিতার আর্জি, তিনি পিতা হয়ে মেয়েকে কি করে খুন করবেন! তিনি যে সন্তান হিসাবে মেয়েই চেয়েছিলেন। এমনকি মেয়ের জন্মের পর খুশির বশে সবাইকে মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। ছেলে নয় মেয়েরই প্রত্যাশা যে করেছিলেন তার সাক্ষী হিসাবে আশা কর্মীকে দাঁড় করাতে পিছুপা নন পিতা অজয় গোপ। তাহলে কি মদমত্ত থাকা এবং সংসারের অশান্তি সৃষ্টির জন্যই এলাকাবাসীর দৃষ্টিকটু হয়ে পড়াটাই এদিনকার ঘটনার মূল কারন! এসব প্রশ্নের মধ্যেই বৃহস্পতিবার খোয়াই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তদন্ত শুরু করে। তবে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ শ্বাসনালীতে দুধ আটকে মৃত্যু হতে পারে শিশু কন্যাটির। যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেয়ে সঠিক কিছু বলতে চাইছে না পুলিশ।
তিন মাসের শিশু কন্যা দীপিকার মৃত্যুর কারন হিসাবে পুলিশ, এলাকাবাসী এবং মৃত শিশুর পিতা অজয় গোপের দেওয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য, অনুমান ও সন্দেহ, এসবের সমাধান সূত্র লুকিয়ে রয়েছে ময়না তদন্তের রিপোর্র্টে। এর জন্য অপেক্ষা করতে সবাইকেই। বৃহস্পতিবারই শিশুটির মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য খোয়াই জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য লালছড়া এলাকায়। জনগন চাইছেন প্রকৃত দোষী সামনে আসুক এবং উপযুক্ত শাস্তি পাক।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*