লোনের টাকা সময় মতো ফেরৎ না দিতে পারায় পারিবারিক অশান্তি

IMG-20201109-WA0178আপডেট প্রতিনিধি, বক্সনগর, ১০ নভেম্বর ৷। মাইক্রোফাইনান্স কোম্পানির লোনের টাকা সময় মতো ফেরৎ না দিতে পারায় পারিবারিক অশান্তির আগুনে জ্বলতে হচ্ছে সুকিয়া বেগমের পরিবারকে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, বক্সনগরের কলসীমুড়া পঞ্চায়েত এলাকার ২নং ওয়ার্ড রতনদোলা পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা সুকিয়া বেগম নিজের বিশেষ কোনো এক কাজের প্রয়োজনে ভারত মাইক্রোফাইনান্স কোম্পানি থেকে চড়া সুদে লোনে টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু দেশের বর্তমান করোনা কালীন মহামারির ফলে এক দিকে যেমন মানুষ কর্মহীনতায় ভুগছে, অপর দিকে আর্থিক সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না। এদিকে আবার মাইক্রোফাইনান্স কোম্পানি থেকে নেওয়া চড়া হারে সুদ সমেত লোনের টাকা ফেরৎ দেওয়ার তাগিদ। সব মিলিয়ে যেন মহা যন্ত্রণায় ভাসছে পরিবারটি। জানা গেছে, সুকিয়া বেগমের স্বামী বহু আগেই দেশান্তরি হয়েছিল। অভাবের সংসারের গ্লানি টানতে বড় ছেলে ব্যাঙ্গালোরের কোনো এক হোটেলে সিকিউরিটির কাজ করছেন। সামান্য বেতনে কাজ করে প্রতি মাসে বাড়িতে টাকা পয়সা পাঠাতে পারছেন না। এদিকে ছেলের অবর্তমানে তাকে না জানিয়ে মাইক্রোফাইনান্স কোম্পানির সুদ সমেত লোনের টাকা ফেরৎ দিতে না পারায় অফিসের লোকজন এসে বাড়িতে টাকা দিতে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। বিশেষ করে ভারত ফাইনান্সের বক্সনগর ব্রাঞ্চ অফিসের ম্যানাজার বাবু প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করে চলছেন বলে অভিযোগ। ফলে এক দিকে কোম্পানির ক্রমাগত আর্থিক চাপ, অন্যদিকে রুজি-রোজগার হীনতা। সব মিলিয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়ে সুকিয়া বেগম দুই দুই-বার আত্মহত্যা করতে গেলে, উভয় সময়ই প্রতিবেশীদের নজরে পড়ায় বেঁচে গেলেন। এদিকে সুকিয়া বেগমের বড় ছেলে সুমন মিয়া মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, তার মা লোন নেবার সময়ে ছেলে সুমন মিয়াকে একবারের জন্যেও জানায় নি। এমনকি মায়ের অবর্তমানে নমিনি হিসেবে তাকেই রাখা হয়েছে। কিন্তু নমিনির সমস্ত রকমের নথিপত্র গুলোতে ছেলে সুমনের অজান্তেই সমস্ত সই নকল করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, কোম্পানির কর্মীরা কোনো রকমের রুজি রোজগারের উৎস যাচাই না করেই চড়া সুদের ব্যবসা করতে গিয়ে লোন দিয়ে দিচ্ছেন। সুমন জানায়, বর্তমানে সে অনেকটাই আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। যে কোনো সময় বর্তমান হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি ছাটাই করে দিতে পারে। সেই অবস্থায় তার পরিবার চালাতে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার উপর আবার কিস্তির টাকা চালানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে নিজের নথিপত্রাদি দিয়ে তাকে অঙ্গাত রেখে ফাইনান্স কর্মীদের এমন লোন প্রদান এবং কিস্তির টাকার চাপে পড়ে যদি পরিবারের কোনো সমস্যা হয়, তাহলে তিনি আইনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*