সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ২৮ ফেব্রুয়ারী || গতি আর নেশা একসঙ্গে যুক্ত হয়ে কেড়ে নিল আরেকটি প্রাণ। ঘটনা বিলোনিয়া থানার অন্তর্গত ঝরঝরি এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভানু সেন, বয়স ৬৫, বাড়ি বিলোনিয়া দক্ষিণ মির্জাপুর ম্যাচ ফ্যাক্টরি এলাকায়। উনি প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় বিভিন্ন বাড়িতে রোজের দুধ পৌঁছে দিয়ে তার নিকট আত্মীয় জগতপুরে বাসিন্দা মৃত সুদীপ বিশ্বাসের স্ত্রী অর্থাৎ উনার শালিকা রিনা বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বাধে-বিপত্তি। দ্রুত গতিতে আসা একটি পালসার বাইক যার নম্বর টি এ আর জিরো ৮ বি ৮৯৭৬ সজোরে পিছন থেকে ধাক্কা মারে ভানু সেনের বাইসাইকেলে। ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই বাইসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যান ভানু সেন। বাইক আরোহির নাম রাহুল মজুমদার। বিলোনিয়া রতন পুরের বাসিন্দা রাহুল মজুমদার পৌয়াং বাড়ি আরডি ব্লকে প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরত আছেন। রাহুল মজুমদারের বক্তব্য অনুসারে ভানু সেন রাস্তার ডাইন সাইড থেকে বাম সাইড দিকে হঠাৎ বাক নেন এতে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং সজরে ধাক্কা মারে ভানু সেনের সাইকেলে। ফলে দু’জনই ছিটকে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ৬৫ বছর বয়সি ভানু সেন। এই ঘটনার পর খবর দেয়া হয় বিলোনিয়া অগ্নি নির্বাপক দপ্তর অফিসে। সেখান থেকে গাড়ি দ্রুত ছুটে এসে উদ্ধার করে নিয়ে আসে ভানু সেনকে বিলোনিয়া হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে পুলিশ ঘাতক বাইক সহ চালক রাহুল মজুমদারকে আটক করতে সক্ষম হয়। সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে, রাহুল মজুমদার আকন্ঠ মদ্যপান করে বাইক চালাচ্ছিলেন, যার ফলে এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে রাহুল মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয় বলে জানা যায়।
এখন পর্যন্ত যা চলছিল আইন অনুযায়ী ঠিকঠাক। কিন্তু এর পরই শুরু হয় অন্য খেলা। ঘাতক বাইক চালককে পুলিশ আটক করে আদালতে সোপর্দ করে, তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারনে রাহুল মজুমদারের বিরুদ্ধে তার দপ্তর কোন ধরনের আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। সুত্রের খবর এখন মীমাংসার মধ্য দিয়ে ঘটনার ইতি টানার প্রকৃয়া নাকি চলছে। তাতে আমাদের সংবাদ মাধ্যমের কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল পৌয়াং বাড়ি আরডি ব্লকে প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত একজন কর্মি থানায় আটক হল, পুলিশি সমস্ত প্রকৃয়া যার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়। আদালতে সোপর্দ করার পর জেল কাস্টডিতে এখন ঘাতক বাইক চালক রাহুল মজুমদার। ঘটনার ৭২ ঘন্টা পুলিশ এবং আদালতের হেপাজত কাটানোর পরও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৌয়াং বাড়ি আরডি ব্লকের কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে দেখাযায়নি। তবে কি এর পেছনে চলছে অন্য কোন খেলা। এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।