সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ১৬ সেপ্টেম্বর || তেলিয়ামুড়া শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত আনন্দ মার্গ ইংরেজি মাধ্যম উচ্চ বিদ্যালয়। পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য ফলাফল করে আসছে বেসরকারি এবং অবশ্যই সরকারি অনুমোদিত এই ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়টি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই বিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে কিছুদিন পর পরই জনমানসে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কোভিড বিধি-নিষেধকে তোয়াক্কা না করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে। বিশেষ করে অভিযোগের তীর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলরাম ভৌমিকের বিরুদ্ধে। করোনাকালীন সময়ে যখন সবখানে প্রাইভেট টিউশন বন্ধ ছিল তখন এই বিদ্যালয়ের বেশকিছু শিক্ষক এমনকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেব নিজেও রীতিমতো ঘর ভাড়া করে সামাজিক দূরত্বের আদ্যশ্রাদ্ধ করে ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে প্রাইভেট শিক্ষার বাণিজ্যে মেতে উঠতেন। বেশ কয়েকবার কয়েকজন প্রতিবাদী সাংবাদিকের ধাওয়া পর্যন্ত খেয়েছিলেন এই প্রধান শিক্ষক। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের যানবাহন ব্যবহার করা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। মান্ধাতা আমলের বেশ কয়েকটা গাড়ি রয়েছে এই আনন্দমার্গ উচ্চ বিদ্যালয়ে। যেগুলোর মধ্যে বাদুড়ঝোলা হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে যাতায়াত করতে হয় অথচ গাড়ির মধ্যে পরিষ্কার করে লেখা থাকে সিট ক্যাপাসিটি কত। ভাবতে অবাক লাগে যে বিদ্যালয়ের উপর মহাকুমার একটা বিরাট অংশ নির্ভরশীল, যে বিদ্যালয়ে মানুষ গাঁটের পয়সা খরচ করে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পাঠান সেই বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের যাতায়াতের সময় ঝুঁকি পর্যন্ত নিচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অবশ্যই পরিবহন দপ্তর কে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে।
এই সমস্ত বিষয় নিয়ে বার কয়েক তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন সাংবাদিকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে সরব হয়েছিলেন। এরপর থেকেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনেকটা চক্ষুশূল হয়ে গেছে একাংশ সাংবাদিকরা। এই ঘটনাটা আবারও প্রমাণিত হলো সাম্প্রতিক সময়ে একটা ঘটনার মাধ্যমে। ১৪ই সেপ্টেম্বর আনন্দমার্গ বিদ্যালয়ের তরফ থেকে তেলিয়ামুড়ার একাংশ সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে সংবর্ধিত করা হয় অথচ প্রচার করা হয় তিনি আপনার সমস্ত সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছিল। সংবর্ধিত করতেই পারেন এতে কোন আপত্তি থাকার কথা না কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাংশ ১৭ জন সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে সংবর্ধিত করছেন আর বলার চেষ্টা করছেন সমস্ত অংশের সাংবাদিকদেরকে জানানো হয়েছে। এই বিষয়টা পরিস্কার যে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যারা সরব হয়েছিলেন তাদেরকে গোটা ব্যাপারটায় ব্রাত্য রাখলেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সংবর্ধনা প্রদর্শনের ব্যাপারটা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই গোটা মহকুমা জুরে একটা বিরাট অংশের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে ।অনেকেই জানতে চাইছেন কেন বা কিভাবে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজনের কৌশল অবলম্বন করতে পারেন ? এইভাবে একটা অংশকে সম্মাননা করতে গিয়ে ইচ্ছা করেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরেকটা অংশকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন মানুষের সামনে।
তবে মানুষ সঠিক সময়ে সঠিক বিষয়টা ঠিকই জানবেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিচালন গত সমস্যা নিয়ে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয় কিভাবে একাংশ অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রাইভেট শিক্ষার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন কিংবা প্রাইভেট বিদ্যালয় হলেও কিভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছেই পড়ার জন্য বাধ্য করছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা সময় সময় সরকারি অনুমোদিত হওয়া সত্ত্বেও বুক ফুলিয়ে কিভাবে সরকারি বিধি নিষেধ মান্যতা করছেন না বলরাম বাবুরা এই সব বিষয়ে তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন আগামী দিনে পরিবেশিত হবে।