আপডেট প্রতিনিধি, বক্সনগর, ২৯ সেপ্টেম্বর || শরতের ভোরে আগমন ধানের কচি ডগায় শিশির বিন্দু গুলো যেন এক একটি মুক্তো। বাতাসে দোলা দিচ্ছে কাশ ফুল, আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেগের ভেলা। প্রকৃতি যেন আজ নব রুপে সেজে ওঠেছে। আর মাত্র দূর্গা পূজার প্রতিক্ষার কয়েক দিন বাকি রইল। বাঙালির তের পার্বণের মধ্যে অন্যতম পার্বণ হচ্ছে শারদীয়া উৎসব। কুমোর বাড়িতে, পাল বাড়িতে, আচার্য্য বাড়িতে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা প্রতিমা তৈরীতে। কাঁচা মাটির ডেলা দিয়ে নানান রঙের মূর্তি বানান মৃৎশিল্পি কারিগররা।বক্সনগর এলাকার মধ্যে বহু পুরানো ঐতিহ্যবাহী মূর্তির কারিগর হিসেবে সর্ব প্রথম নামটি হচ্ছে মানিক্যনগর নিবাসী পাঁচ নং ওর্য়াডের বাসিন্দা নেপাল পাল। উনার জন্ম স্থান পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলার ব্রাক্ষ্ম্যনবাড়িয়া উপজেলা ইউনিয়নভুক্ত নবীনগর থানা এলাকার ভোলাচং গ্রামে ১৯৩৯ সালে। ১৯৬৪ সনে বাপ দাদার ভীটে মাটি ছেড়ে, কাকু এবং জ্যেঠুর সঙ্গে আগরতলা শিবনগর শরনার্থী ক্যাম্পে ছিলেন। যখন উনার বয়স ১২ তখন থেকেই মৃৎশিল্পি কাজে বাবা দাদুর সঙ্গে হাতে খড়ি।বিবাহ সুত্রে মানিক্য নগরের বাসিন্দা। বর্তমানে ৮২ বছর চলছে বয়ষের ভারে নুজ্জ। তার পরেও সংসারের ঘানি টানতে মূর্তির কাজ করতে হচ্ছে। বাজারে চলছে দ্রব্য মূল্যের আকাশ ছোঁয়া মূর্তি তৈরী করতে সাজসরঞ্জাম গুলোর দাম দ্ধিগুন হয়ে গেছে। অতিমহামারীর পূর্বে মূর্তি বানিয়ে দু’চারটা পয়সা উর্পাজন করতো ভালই। কিন্তু আজ দু’বছর মহামারির গ্রাসে সংসারজীবন তছনছ হয়ে গেছে। তিনি জানান,আগে ১৮-২০টি দুর্গা কাঠামের বাইনা আসতো। এই বৎসর মাত্র সাতটি দূর্গা প্রতিমা তৈরির অর্ডার পড়েছে। সংসারের ছয়মাস চলে মূর্তির কাজ দিয়ে, আর বাকি ছয়মাস চলে কৃষি চাষাবাদ করে, পরিবারে ৬জন সদস্য।এখন মূর্তি কাজে লাভ নেই, তবুও ঐতিহ্যবাহী পেশা হিসেবে এটাই একমাএ কর্ম। বড়ই অভাবে দিন যাপন করছেন। ভাতা পায় মাত্র একহাজার টাকা। সরকারের নিকট তিন হাজার টাকা করে প্রদান করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
বক্সনগর এলাকার মধ্যে আরও একজন মৃৎ শিল্পী হিসাবে নবীন বয়ষে খ্যাতি অর্জন করছেন তিনি হলেন উত্তর কলমচৌড়া বাগান বাড়ি নিবাসী এক নং ওর্য়াডের বাসিন্দা অতিনদ্র সরকার। তার বয়ষ মাত্র চল্লিশ। উনার কনো মূর্তি তৈরির কাজ করতে শিক্ষা গুরু নেই। সমপূর্ন মৃৎ শিল্পী কাজটি তিনি নিজের দক্ষতা অভিজ্ঞতা ওচোখের আইডিয়া নিজের দখলে নিয়েছে। আট বছর ধরে প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত তিনি। সংসারে পাঁচজন লোক। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা এবং অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী কেনাকাটা করে, আকাশ ছোঁয়া জিনিস পত্র ক্রয় করে সংসার চালাতে খুবই কষ্টের শিকার হয় বলে জানান। এখন পযর্ন্ত দুটি মূর্তির কাঠামো বাইনা এসেছে বলে জানান। তবুও আশা নিয়ে প্রতিক্ষা বসে আছেন শেষ তুলির টানে কিছু উর্পাজন হয় কি না।