মন্ত্রী রামপ্রসাদ পালের হাত ধরে উদ্বোধন হলো অত্যাধুনিক দুগ্ধ সংরক্ষণ কেন্দ্রের

সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ০৭ মে || খোয়াই জেলার কল্যাণপুরে বহু কাঙ্ক্ষিত দুধ সংরক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন হলো সমবায়ে দপ্তরের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পালের হাত ধরে। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধক মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গোমতী মিল্ক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রণজয় দেব, সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলোক রঞ্জন রায়, ত্রিপুরা বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, কল্যাণপুরের বিধায়ক পিনাকি দাস চৌধুরী, খোয়াই জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি হরি শংকর পাল সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা। প্রচণ্ড দাবদাহকে উপেক্ষা করে এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হাজার হাজার জনতার অভিমুখ ছিল আজ কল্যাণপুর।
বর্তমানে ২০০০ লিটার দুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করে এই সংরক্ষণের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অলক রঞ্জন রায় দাবি করেন। এই সংরক্ষণ কেন্দ্রে গোটা খোয়াই জেলার সকাল এবং বিকেলের দুধ গুলো সংরক্ষন করার ব্যবস্থা করা হবে এবং এই উদ্যোগের ফলে অত্র এলাকার দুগ্ধ ব্যবসায়ীসহ দুগ্ধ উৎপাদনকারীদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার মান উন্নয়ন ঘটবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানে আলোচনা রাখতে গিয়ে বিধায়ক পিনাকি দাস চৌধুরী এই সংরক্ষণ কেন্দ্র কল্যাণপুরে চালু হওয়ার বিষয়টা কল্যাণপুরের পাশাপাশি খোয়াই জেলাতে যারা দুগ্ধ উৎপাদক রয়েছেন তাদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার মান উন্নয়নে বিশেষ বিষয় বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই উদ্বোধনের মাধ্যমে আগামী দিনে সাধারণ মানুষ সরকারের দেখানো পথ ধরে আরো আরো বেশি করে গোপালনে উৎসাহ লাভ করবে।
বর্তমানে কল্যাণপুর গ্রামীণ জনপদের তকমাকে পেছনে ফেলে মিনি শহরে পরিণত হয়েছে, সত্যিকার অর্থে এলাকার বিধায়কের প্রচেষ্টাকে ভর করেই গোটা কল্যাণপুরের চেহারা পাল্টে যাচ্ছে, আর এর ফলেই এই কল্যাণপুরের মতো গ্রামীণ জনপদে দুগ্ধ সংরক্ষণের মত অত্যাধুনিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে – নিজের আলোচনার শুরুতে এভাবে কথাগুলো বলছিলেন ত্রিপুরা বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়। শ্রীমতি রায় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই বিষয়টা আগামী দিনে কল্যাণপুরের মানুষের বিকাশে সদর্থক ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক রাজ্যের সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল আলোচনা করতে গিয়ে কল্যাণ পরীর মত এই গ্রামীণ জনপদে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর তথ্য সংরক্ষণ কেন্দ্র চালু হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের স্বার্থে বেকারদের স্বনির্ভর করার স্বার্থে এই কেন্দ্র অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একটা পর্যায়ে তিনি বলেন সবকা সাথ সবকা বিকাশ প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়িত করতে গেলে প্রতিটা সাধারণ মানুষকেই আত্মনির্ভরতার দিকে ধাবিত করতে হবে।এরকম দুগ্ধ সংরক্ষণ কেন্দ্র রাজ্যের মধ্যে আত্মনির্ভরতার মানসিকতার উন্নয়ন ঘটাবে বলে কল্যাণপুরে দাঁড়িয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেন মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল। বর্তমানে দেশের সরকার এবং রাজ্য সরকারের দ্বৈত ভূমিকায় সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানুর জন্য যে নিরন্তর প্রয়াস চলছে তা কল্যাণপুরের মতো গ্রামীণ জনপদে এই সংরক্ষণ কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত বলে তিনি উল্লেখ করেন। বর্তমানে ২০০০ লিটার দুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু হলেও আগামী দিনে এই কেন্দ্রের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে দপ্তর উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে এদিন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল ঘোষণা করেন।
এই অনুষ্ঠানে এছাড়াও আলোচনা করেন রনজয় দেব, আলোক রঞ্জন রায় প্রমুখরা। গোটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কল্যাণপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সৌমেন গোপ। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কাটেন এবং ফলক উন্মোচন করেন মন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা। অনুষ্ঠানের একদম শুরুতেই কচিকাঁচারা মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*