সুব্রত দাস, গন্ডাছড়া, ২০ ডিসেম্বর || কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক এডিসি এলাকার সাধারণ পরিবারগুলির জন্য দেওয়া প্রায় অর্ধকোটি টাকার নয়ছয়ের কলঙ্কে কলঙ্কিত হয়ে ডুম্বুরের জলাশয়ে ডুব দিয়েছে ডুম্বুরনগর আর ডি ব্লক। সাধারণ মানুষের জন্য আসা সরকারী লক্ষ লক্ষ টাকা কিভাবে সরকারী আমলারা বেআইনিভাবে নিজেরা উদর্পূরতি করে চলেছে তার ন্যূনতম খোঁজ করার প্রয়োজন মনে করছে না স্থানীয় সমাজসেবক বা শাসক দলের নেতৃত্বরা। ডুম্বুরনগর ব্লকের এই মোটা অংকের অর্থরাশি আত্মসাতের কথা ছড়িয়ে পড়তেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে।
ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমার অন্তর্গত ডুম্বুরনগর ব্লক থেকে উক্ত ব্লকের অধীনস্থ উনিশটি এডিসি ভিলেজের গরিব মেহনতি পরিবার বা বিপিএল পরিবার গুলির জন্য প্রতি পরিবারে ৪,৫০০ টাকা করে একটি বরাদ্দ আসে। এই টাকা দিয়ে যেসমস্ত পরিবারে টয়লেট রয়েছে সেই সমস্ত পরিবারের পুরাতন টয়লেটের পাশে একটি করে রিট্রোফিটিং -এর মাধ্যমে ছোট আকারের টেংকি নির্মাণ করার জন্য। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুম্বুরনগর ব্লকের ১৯টি এডিসি ভিলেজের জন্য মোট এক হাজার পাঁচশো জন বেনিফিসিয়ারী নির্বাচিত হন। বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, ডুম্বুরনগর ব্লকের ১৯টি এডিসি ভিলেজের ১৫০০ জন বেনিফিসিয়ারির জন্য বরাদ্দকৃত প্রতি বাড়িতেই রিট্রোফিটিং-এর কাজ খাতায়পত্রে সম্পন্ন হলেও বাস্তবে সমুদ্রের জলে চামচ সমান জলের সমান।
আমদের প্রতিনিধি বারবার এই দিন দুপুরের ডাকাতির ঘটনার সঠিক তথ্য জানতে ডুম্বুরনগর ব্লকের বিভিন্ন আফিসারদের মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু উত্তরে বিভিন্ন আফিসাররা জানান, রিট্রোফিটিং -এর কাজটি ব্লকের নয়। মহকুমা শাসকের অফিস থেকে বের হয়েছে। শিক্ষিত নিষ্ঠাবান ব্লকের জনাকয়েক অফিসারের ভুয়া তথ্যকে বিশ্বাস করে আমরা মহকুমা শাসকের অফিসে যোগাযোগ করি। মহকুমা শাসকের অফিস থেকে আমাদের জানানো হয়, এই ব্যাপারে মহকুমা শাসক কিছুই জানেন না। তখনই সন্দেহের দানা বাধে। এরপরই ঘটনার সত্যতা জানতে আমরা ফোন করি ডুম্বুরনগর ব্লকের বিডিও জয়দ্বিপ দেববর্মাকে। ঘটনার সত্যতা জানাতে গিয়ে বিডিও জয়দ্বিপবাবু জানান, রিট্রোফিটিং নিয়ে বহু সমস্যা রয়েছে। রিট্রোফিটিং -এর কাজ সম্পূর্ণই ব্লকের কাজ। তিনি আরো জানান, ডুম্বুরনগর ব্লকের ১৯টি এডিসি ভিলেজের ভিলেজ সচিবদের ইমপ্লিমেন্টিং আফিসার করে কাজ সম্পন্ন করার কাজ চলছে। কিন্তু আমাদের কাছে যতটুকু সংবাদ রয়েছে তাতে জানা গিয়েছে ১৯টি এডিসি ভিলেজের জন্য এক হাজার পাঁচশো জন বেনিফিসিয়ারীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬৫০ জন বেনিফিসিয়ারীর বাড়িতে রিট্রোফিটিং -এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু খাতায় পত্রে এক ১৫০০ জন বেনিফিসিয়ারির কাজই সম্পন্ন হয়েছে বলে দেখিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা পকেটস্ত করে নিয়েছেন উক্ত ব্লকের জনাকয়েক রাঘব বোয়ালরা। এমন সংবাদ এখন গন্ডাছড়া মহকুমা সদরের আকাশে বাতাসে। সাধারণ মানুষ তার সঠিক তদন্ত চায়। রিট্রোফিটিং -এর কাজ না করেই কোন কোন রাঘব বোয়ালদের পকেটে ঢুকেছে সেই অর্ধকোটি টাকা তা খূব সহসাই জন সমক্ষে আসবে।