গোপাল সিং, খোয়াই, ০৮ জানুয়ারি || সীমান্তের ওপার বাংলাদেশে খুন হওয়া এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হলো খোয়াইতে। সীমান্ত পাহাড়ায় বিএসএফ এর চরম উদাসীনতাকে কাজে লাগিয়ে কুচক্রীরা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ থেকে লাশ নিয়ে সীমান্ত ডিঙ্গিয়ে খোয়াই গৌরনগর এলাকায় এনে ফেলে রাখা হয়। সব ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে সোশাল মিডিয়ার দৌলতে। খোয়াই থানাধীন গৌরনগর এলাকা থেকে যে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়, তার পরিচয় প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ থেকে সোশাল মিডিয়ায় এক পোষ্টে যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তার সাথে মৃতদেহের হুবহু মিল রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মৃতের ছেলে সামাজিক মাধ্যমে নিখোঁজ সংবাদ পোষ্ট করেন গত ৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে। আর গৌরনগর এলাকায় লাশ উদ্ধার হয় ৬ই জানুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখে। যাইহোক ঐ পোষ্টে উল্লেখ করা হয় যে মো: জহর আলী নামে ঐ ব্যক্তি ঢাকা থেকে ফিরে স্থানীয় নালুয়া বাগানে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর থেকে জহর আলীর আর খোঁজ মিলছিল না। ঐ পোষ্ট থেকে আরও জানা যায় যে, নিখোঁজ ব্যক্তির কাছে নগদ ১১ হাজার টাকা সহ অনেক কিছু ছিল। স্বাভাবে সহজ-সরল ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। পরিবারের লোকজন খোঁজখবর নিতে গিয়ে বাড়ীর পাশে জহর আলীর নীল রঙের জুতা ও পরনের মাফলার খুঁজে পায়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে সেখানেই অপরিচিত সাদা রঙের জুতা পাওয়া যায়। এই জুতা নিখোঁজ ব্যক্তির না হওয়াতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ছেলে নিজের একটি ফোন নম্বর (০১৭৪১১৮৮৫৬৫) শেয়ার করে তার পিতার সন্ধান চেয়ে মানবিক আবেদন জানায়।
তাহলে ঘটনা এমন নয় তো যে বাংলাদেশের নালুয়াতেই মো: জহর আলীকে টাকার জন্য খুন করা হয় এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর বিরুধী শক্তি ঐ মৃতদেহকে ত্রিপুরা রাজ্যে পাচার করে একটা জঘন্য খেলায় মত্ত হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তির মৃতদেহ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে উদ্ধার হয়েছে, তাই এই সন্দেহকে যথেষ্ট তাৎপর্যের সাথে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের যে টহলদারীর নমুনা তা ত্রিপুরার মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে যেভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে এবং নিত্যদিন চুরির ঘটনা ঘটে চলছে খোয়াই সহ গোটা ত্রিপুরা রাজ্যেই, সেটা কারোরই অজানা নয়। আর বিএসএফ’র এই চরম উদাসীনতাকেই কুচক্রীরা হাতিয়ার করে একটি মৃতদেহকে নিয়ে মৈত্রীর সম্পর্ককে বিনষ্ট করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোরিডর হিসাবে ত্রিপুরাকে বেছে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরী করে রাজ্য এবং গোটা দেশের উন্নতীর প্ল্যানিংয়ে ব্যস্ত, এর মধ্যে বিএসএফের চরম গাফলতির ফলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরী হচ্ছে। অথচ এটা জলের মতো পরিষ্কার যে, সীমান্ত ওপারে একটি খুনের ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে অস্থির পরিস্থিতি তৈরী করার জন্য কাজে লাগানো হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তে এই বিষটিও প্রকাশ্যে চলে আসবে বলে মনে করছেন জনসাধারণ।