একনজরে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের রাজ্যের বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ মার্চ || ২১শে  মার্চ, শুক্রবার থেকে শুরু হয় ত্রিপুরা বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। চলবে আগামী ১লা এপ্রিল পর্যন্ত।
এদিন রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও পেনশনারদের জন্য ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। আগামী ১লা এপ্রিল ২০২৫ থেকে তা কার্যকর হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে আগরতলা মহিলা কলেজ হবে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার ত্রিপুরা বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের ভাষনে জানালেন অর্থমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়।
শুক্রবার অর্থমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়ের বাজেট পেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেব, রাজ্যের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে এটা উল্লেখযোগ্য বাজেট।
ত্রিপুরা বিধানসভার ২০২৫-২৬ এর বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ:

আইজিএম হাসপাতাল ভবনের ঐতিহ্য সংরক্ষণে সংস্কার কাজের জন্য ৫.৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এই অর্থবছরে কৃষক কল্যাণে ৪০,০০০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।

৮.৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে উনকোটি জেলায় গড়ে তোলা হবে মৎস সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

টাকারজলা ও মোহনপুর কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত করা হবে। স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানে এই দুটি মহকুমা হাসপাতাল ফার্স্ট রেফারেল ইউনিট হিসাবে কাজ করবে।

গোমতী জেলা হাসপাতালের পরিষেবা সম্প্রসারণে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও উদয়পুরে ত্রিপুরা সুন্দরী মহকুমা হাসপাতালের সংস্কার করা হবে।

বিকশিত ত্রিপুরা বাজেটে পরিবহন পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন ঘোষণায় মোহনপুর, কল্যাণপুর, বিশালগড়, মনুঘাট এবং যতনবাড়িতে নতুন মোটর স্ট্যান্ড নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ব্যয় হবে ১০ কোটি টাকা।

ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (TSPCB) ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে  কুমারঘাট এবং উদয়পুরে জোনাল অফিস এবং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে।

অর্থবর্ষে রাজ্যে যানজট নিরসনে আরো দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রথমটি নির্মিত হবে আগরতলা, রাধানগর হইতে আই.জি.এম হাসপাতালের মাঝে ও দ্বিতীয়টি হবে উদয়পুর, জগন্নাথ চৌমুহনী হইতে খিলপাড়া অব্দি।

রাজ্যের বীর শহীদ সেনানীদের আঠারোর্ধ অবিবাহিত ও নির্ভরশীল সন্তানদের জন্য মাসিক ২০০০/- টাকা সামাজিক ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে Chief Minister’s Assistance for son/daughter of Army/CAPF Personnel শুরু করা হচ্ছে, যার জন্য ২.৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

রাজ্যের মেধাসম্পন্ন  ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ সুবিধা পৌঁছে দিতে রাজ্যের সকল মহকুমাতে তৈরি করা বিজ্ঞান ও ইংরেজির জন্য কোচিং সেন্টার, এই সেন্টারগুলোতে নিয়োগ করা হবে দক্ষ প্রশিক্ষকদের।

বিকশিত ত্রিপুরা নির্মাণের লক্ষ্যে ২০২৫-২৬ অর্থ বর্ষের বাজেটের ক্রীড়া ও যুব বিকাশে কৈলাশহর ও উদয়পুরে দুটি মাল্টিপারপাস স্পোর্টস ইন্ডোর হল নির্মাণ করা হবে।

গন্ডাতুইসা ও কাকড়াবনে সিন্থেটিক ফুটবল টার্ফ বসানো হবে।

বাধারঘাট স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট স্পোর্টস হোস্টেল নির্মাণ করা হবে।

৫০টি ওপেন জিমনাসিয়াম স্থাপন করা হবে।

আগরতলা ভোলাগিরিতে গ্যালারি ও আন্তর্জাতিক মানের সুইমিংপুল, প্রাকৃতিক ফুটবল মাঠ, মাল্টিপারপাস স্পোর্টস হলের সুবিধা গড়ে তোলা হবে।

 মুখ্যমন্ত্রী শস্য শ্যামলা যোজনা চালু করা হচ্ছে, এই যোজনায় উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল চাষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যার জন্য  ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

৫৫ টি নতুন মিনি মোবাইল ভেটেরিনারি চালু করা হবে। ব্যয় হবে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।

বামুটিয়ায় নতুন দুগ্ধ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপন করা হবে। ব্যয় হবে ২ কোটি টাকা।

ঊনকোটি জেলায় মৎস্য চাষ সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ব্যয় হবে ৮ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা।

আমবাসা, কাকড়াবন ও করবুকে নতুন ডিগ্রী কলেজ স্থাপন করা হবে।

বৌদ্ধিকভাবে অক্ষম নাগরিকরা যাতে কোনোভাবেই পরিবারের বোঝা না হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য Scheme for Mentally Challenged Person প্রকল্পে মানসিক প্রতিবন্ধীদের সামাজিক ভাতা ৫০০০/- টাকা করা হয়েছে। তাছাড়া ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আগরতলায় নির্মিত হবে বৌদ্ধিকভাবে অক্ষম (intellectually disabled)  নাগরিকদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র।

রাজ্য সরকারের নয়া প্রকল্প ‘মুখ্যমন্ত্রী বালিকা সমৃদ্ধি যোজনায়’ অন্ত্যোদয়ভুক্ত পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্মের পর রাজ্য সরকার  এককালীন ৫০,০০০/- টাকা বন্ড হিসেবে আর্থিক অনুদান প্রদান করবে, যা কন্যার  ১৮ বছর বয়সের পর সম্পূর্ণ অর্থরাশি ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারবে।

রাজ্যের কর্মপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য হাপানীয়ায় আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের নিকটে নির্মিত হবে “Centre for Computer Based Examination”। ১০০০ কম্পিউটার সমৃদ্ধ এই সেন্টার নির্মাণের ফলে IBPS, RRB, SSC, CUET সহ অন্যান্য পরীক্ষার সেন্টার হবে রাজ্যেই। যার ফলে আগামী দিনে রাজ্যের বাইরে পরীক্ষার জন্য যেতে হবে না।

রাজ্যের কর্মদক্ষ যুবশক্তির কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করার দিশায় আগরতলা, উদয়পুর ও আমবাসায় নির্মিত হবে তিনটি “Tripura Competitive examination Centre”। যার জন্য  ১.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। স্ক্রিনিং পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের সব জেলার  নির্বাচিত প্রার্থীরা এই প্রশিক্ষণের সুবিধা লাভ করবেন।

রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানী আগরতলায় নির্মিত হবে ‘ভারত মাতা ক্যান্টিন’, আগরতলা পৌরনিগমের পরিচালনায় এই ক্যান্টিনে দুরবর্তী এলাকা থেকে আগরতলায় সফরকারী রাজ্যের নাগরিকদের মিলবে সুলভে ভোজন ও নৈশযাপনের সুবিধা।

রাজ্য সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে  ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনা’ নামে একটি যোজনা শুরু করছে যার মাধ্যমে অন্ত্যোদয়ভুক্ত পরিবারের কন্যার বিবাহের জন্য সরকার  ৫০,০০০/- টাকা ব্যয় করবে ,যার জন্য ১০ কোটি টাকার অর্থরাশি বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যের মহকুমা গুলোতে আয়োজিত হবে গণবিবাহ

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*