ফের একবার খোয়াই জেলা হাসপাতালের পরিষেবা প্রশ্নের মুখে

khwগোপাল সিং, খোয়াই, ১৮ আগষ্ট ।। খোয়াই জেলা হাসপাতালে অপকর্মসংস্কৃতি যেন পিছুই ছাড়ছেনা। একের পর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসলেও স্বাস্থ্য দপ্তর নির্বাক। ভুল বাইয়োক্যামিকাল টেস্ট রিপোর্ট এবং ভুল চিকিৎসার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার ফের একবার খোয়াই জেলা হাসপাতালের বহি:বিভাগে চক্ষু পরীক্ষা নিয়ে চরম বিভ্রান্তকর ঘটনা প্রকাশ্যে এল। এমনিতে খোয়াই জেলা হাসপাতালের বহি:বিভাগে চক্ষু পরীক্ষার জন্য কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। কিন্তু এর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রতন সাহা নামে একজন আই টেকনিশিয়ান। উনার বিরুদ্ধে এর আগে কয়েকশত অভিযোগ জমা পড়ে খোয়াই জেলা হাসপাতালের এম.এস.-এর নিকট। জনগন বলছেন, অকর্মণ্য এম.এস. সাহেব সুভাষপার্ক স্থিত একটি ঔষধের দোকানের পেছনে সারাদিন প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এমনকি রাস্তায় বসে রোগী ধরার কাজ ও। অথচ খোয়াই জেলা হাসপাতালের এম.এস. এর দুরদর্শিতার অভাবে হাসপাতালের বহি:বিভাগ এবং জরুরী বিভাগে পরিষেবা লাটে উঠেছে। জেলা হাসপাতালে নেই ও.টি. রুম। মুমুর্ষ রোগীদের পাশেই চলে জরুরী পরিষেবা। দূর্ঘটনা, বিষ খাওয়া থেকে নানান রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হয় হাসপাতালে ভর্ত্তি রোগীদের বেডের পাশেই। তাছাড়া গোটা হাসপাতালে পথ কুকুর এর বাস। হাসপাতাল চত্বরে পথ কুকুরদের যন্ত্রনায় নাজেহাল রোগীরা। এহেন অব্যবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার খোয়াই জেলা হাসপাতালের বহি:বিভাগে ঘটে গেল আরেক বিভ্রান্তিকর ঘটনা।
চক্ষু রোগীদের যারা গ্রামীন এলাকার গরীব-শ্রমিক-কৃষক শ্রেনীর মানুষ, চক্ষু পরীক্ষা করাতে আসেন। বহি:বিভাগে কোন চক্ষু বিশেষজ্ঞ না থাকার কারনে সেই কিন্তু দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আই টেকনিশিয়ান রতন সাহা। তিনি নিজেই চক্ষু পরীক্ষা করেন এবং সেই সাথে বে-আইনীভাবে হাসপাতালের অভ্যন্তরেই চশমার ব্যবসা করেন। রোগীদের কাছ থেকে পাঁচশ, সাতশ টাকা আদায় করে আগরতলা থেকে উনি চশমা তৈরী করে এনে দেন। মঙ্গলবার আই টেকনিশিয়ান রতন সাহা’র স্বীকার হয় খোয়াই গৌরাঙ্গটিলা নিবাসী গরীব বিধবা মহিলা। মহিলার কাছ থেকে চশমা বাবদ পাঁচশ টাকা আদায় করে রতন সাহা। কিন্তু সেই চশমা নিয়ে বিধবা মহিলা যখন খোয়াইয়ের একটি চশমার দোকানে যান, প্রেসক্রিপশন দেখালে সেই চশমার মূল্য সাড়ে তিনশ টাকা বলা হয়। তখন গরীব মহিলা বহি:বিভাগের আই টেকনিশিয়ান রতন সাহা এবং অন্যান্য কর্মীদের বিষয়টি জানান এবং টাকা ফেরত দেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু টাকা ফেরত চাইতেই শুরু হয় বাক-বিতন্ডা এবং বাক-বিতন্ডা রূপ নেয় রণক্ষেত্রের। বাধ্য হয়েই আই টেকনিশিয়ান রতন সাহা পাঁচশ টাকা ফেরত দেন এবং বহি:বিভাগে অন্য কর্মচারীদের চাপে তিনি স্বীকার করেন আরোও অনেক গরীব মানুষের টাকা তিনি নিয়েছেন। সব টাকা তিনি ফিরিয়ে দেবেন। অথচ এতসব ঘটনার পরও এম.এস. সাহেব ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নিতে আসেননি। বরং মোবাইল ফোনে খোঁজ খবর নেন। প্রতিদিন নানান ভাবে নাজেহাল হচ্ছেন বিশেষ করে গ্রামের সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ। দিশেহারা সাধারন মানুষের প্রশ্ন, খোয়াই জেলা হাসপাতালের কর্মসংষ্কৃতি আর ফিরবে কি?

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*