জাতীয় ডেস্ক ।। অপেক্ষা আর মাত্র চার দিনের। ১৫ ফেব্রুয়ারি মোদিগড় গুজরাতের রাজকোট গ্রামে মহা সমারোহে দ্বারোদ্ঘাটন হতে চলেছে ঝাঁ-চকচকে মন্দিরের, যেখানে অধিষ্ঠিত দেবতা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সফরে নিজের নামাঙ্কিত বহুমূল্য স্যুট পরে চমকে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নয় লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশি দর্জিকে দিয়ে পোশাক তৈরি করানোয় জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তবে সম্প্রতি সেই বিতর্ককেও ছাপিয়ে গিয়েছে মোদির খাস তালুক গুজরাতের একটি ঘটনা।
গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদির নামে মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করেন গুজরাতের রাজকোট গ্রামের বিজেপি সমর্থকরা। সেই মতো ২ বছর আগে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। সেই অবস্থাতেই প্রতিদিন মোদির ছবি পুজা করা শুরু হয়। তবে লোকসভা নির্বাচনে দলের বিরাট সাফল্যের পর মন্দিরে তার মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।
মন্দির তহবিলে মোটা চাঁদা প্রদানকারী রমেশ উন্ধাড় জানিয়েছেন, টানা ৪ বছর ধরে তৈরি হয় নমো-র আবক্ষ মূর্তি। খরচ পড়ে ১,৬৫০০০ টাকা। জানা গিয়েছে, ওড়িশার শিল্পীরা এই মূর্তি নির্মাণ করেছেন।
গ্রামপ্রধান মনসুখ ঠুমার জানিয়েছেন, প্রতি সকাল ও বিকেলে মন্দিরে নরেন্দ্র মোদির নামগান-সহ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। তার মতে, দেশের প্রতিটি গ্রামে এমন মন্দির তৈরি করা প্রয়োজন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন গুজরাতের কৃষিমন্ত্রী মোহনভাই কল্যাণজীভাই কুন্দরিয়া।
তবে মোদিভক্তদের এই পদক্ষেপ নতুন নয়। এ ব্যাপারে পথিকৃত্ বলা চলে উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি জেলার ভগবানপুর গ্রামকে। লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০১৪ সালের গোড়ায় এখানেই প্রথম মোদি-মন্দিরের উত্পত্তি। স্থানীয় এক প্রাচীন শিব মন্দিরকে মেরামত করে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘নমো নমো মন্দির’। এই গ্রামে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ‘স্বামী নরেন্দ্র মোদি’ রূপে পূজিত। সকাল-বিকেল রীতিমতো ‘মোদি-চালিশা’ পাঠ-সহ আরাধনা চলে।
রাজনৈতিক নেতাদের দেবতা জ্ঞানে পুজার নজির এদেশে অবশ্য আরও রয়েছে। হায়দরাবাদ-বেঙ্গালুরু রাজ্য সড়কের পাশে জমি কিনে কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধীর মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর রাও। এআইএডিএমকে নেত্রী আম্মা জয়ললিতার মন্দির তৈরির ঘটনাও এর আগে ঘটেছে। আবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন উত্তরপ্রদেশে নিজের একাধিক মূর্তি স্থাপন করেছিলেন বসপা নেত্রী মায়াবতী।