পূজা আয়োজক ক্লাব এবং বিভিন্ন এনজিও’দের নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আলোচনা সভা

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর || ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং ত্রিপুরা ইআইএসিপি হাবের যৌথ উদ্দগ্যে আগরতলাস্থিত সুকান্ত একাডেমীর অডিটোরিয়াম হলে পূজা আয়োজক ক্লাব এবং বিভিন্ন এনজিওদের নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য ছিল পূজা মরশুমে কিভাবে শব্দ দূষণ, জল দূষণ, বায়ু দূষণ রুখতে এবং এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকলকে সচেতন করা।
বৃহস্পতিবার এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের সচিব তথা ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ কে. শশীকুমার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক, ডঃ বিশাল কুমার। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের অধিকর্তা মহেন্দর সিং এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব নাথ। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব ডঃ বিশু কর্মকার।
এদিন স্বাগত ভাষণ রাখতে গিয়ে ত্রিপুরা সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের সচিব তথা ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ কে. শশীকুমার আগতদের বলেন যে, এই পূজারদিনগুলিতে মূলত শব্দ দূষণ নিয়েই বেশি অভিযোগ পাওয়া যায়। আমাদের সবার এটা মাথায় রাখতে হবে যে শব্দের কারণে অন্যের ক্ষতি যাতে কোনভাবেই না হয়।
এরপর পর্ষদের সদস্য সচিব ডঃ বিশু কর্মকার একটি পাওয়ের পয়েন্ট উপস্থাপনার দ্বারা সবাইকে শব্দ দূষণ, মূর্তি ও প্যান্ডাল তৈরী সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিমালা, মূর্তি বিসর্জন এবং পূজা পরবর্তী অনুষ্ঠান নিয়ে যে সকল আইন আমাদের রাজ্য প্রযোজ্য আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং অনুরোধ করেন যাতে পূজার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ক্লাব ও অন্যান্যরা যাতে ঐসব আইন মেনে চলেন।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহতা ডঃ বিশাল কুমার উনার ভাষণে বলেন যে, আগামী দিনগুলিতে সচেষ্ট থাকতে হবে যাতে পূজা চলাকালীন দিনগুলিতে অযথা শব্দ দূষণ না হয়। তিনি আরো বলেন যে, আমাদের ঐতিহ্যে সাউন্ড সিস্টেম অথবা ডি জে সেট ব্যবহার করে পূজা করার রীতি ছিল না। কিন্তু যেহেতু এইসব ব্যবসার সাথে এখন অনেক লোক যুক্ত এবং তাদের জীবিকা এইসব ব্যবসার উপর নির্ভরশীল, তাই সাউন্ড সিস্টেম অথবা ডি জে সেট ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ না করে নিয়ন্ত্রিত ভাবে এবং নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চালাতে দেওয়া হবে। তিনি এও বলেন যে, যদি নিয়ম বহির্ভূত কোনো কার্যকলাপ নজরে আসে তাহলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও তিনি পিছপা হবেন না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব নাথ উনার ভাষণে জানান যে, আগামী দিনে ত্রিপুরা পুলিশের তরফেও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে যাতে করে সাউন্ড সিস্টেমে বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটার লাগানো হয়। তিনি এও বলেন যে, সবার সহযোগিতা ছাড়া এই শব্দ দূষণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয় তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা এই মত বিনিময় সভার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন যে, আমাদের শব্দের যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনই তাকে নির্দিষ্ট মাত্রায় মধ্যে রাখাও জরুরী। তিনি বিশিষ্ট সঙ্গিতশিল্পীদের উদাহারন দিয়ে বলেন যে, সঙ্গিত শিল্পীদের মধুর সঙ্গীত ছাড়া যেমন আনন্দের দিনগুলি সম্পূর্ণ হয় না, তেমনই মাত্রাতিরিক্ত আওয়াজ আমাদের অসুস্থতা সৃষ্টি করে। তিনি উপস্থিত সবার কাছে আবেদন করেন উনারা যেন যে কোনো ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসে এবং দূষণ মুক্ত, নির্মল ত্রিপুরা গড়তে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল মত বিনিময় পর্ব যেখানে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয় এবং তাদের সমস্যার কথা শোনা হয়। প্রায় সব অংশগ্রহণকারীরাই এই উদ্দগ্যের জন্য পর্ষদকে শুভেচ্ছা জানায় এবং পরিবেশ রক্ষায় পূর্ণ সমর্থন জানায়।
ধন্যবাদ সূচক আলোচনায় ত্রিপুরা সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের অধিকর্তা মহেন্দর সিং এই অনুষ্ঠানে উপস্থত সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আলোচ্য বিষয়গুলির বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতার কামনা করেন এবং পরিবেশ বান্ধব জীবনধারা অনুসরণ করতে সবাইকে উৎসাহিত করেন।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*