গোপাল সিং, খোয়াই, ১০ এপ্রিল || খোয়াই জেলা হাসপাতালে ১৪ মাসের এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য ও বিতর্ক। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, সময়মতো রেফার না করায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিবারের অভিযোগ, শিশুটিকে শেষ মুহূর্তে তিনটি ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শ্বাসকষ্ট শুরু হলে অক্সিজেন দেওয়া হয় এবং তখনই তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরিবারের মতে, আগেভাগে রেফার করলে হয়তো শিশুটি প্রাণে বেঁচে যেত।
তবে ঘটনার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন শিশু চিকিৎসক ডাঃ রাজেশ দেববর্মা। তিনি জানান, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিশুটিকে খোয়াই জেলা হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে আনা হয় খিঁচুনি নিয়ে। তাৎক্ষণিকভাবে ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয় এবং খিঁচুনি বন্ধও হয়ে যায়। রাতের শিফট শেষে হাসপাতাল ছাড়ার আগেও শিশুটি সুস্থ ছিল বলে দাবি তার। পরদিন সকালেও রাউন্ড ডিউটিতে শিশুটিকে দেখতে পান তিনি, তখনো শিশুটি মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল, শুধু কিছুটা দুর্বলতা ও বমিভাব ছিল। দুপুর পর্যন্ত কেউ কোনো গুরুতর সমস্যার কথা জানাননি বলে জানান ডাক্তার বাবু। তবে রাতের দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে তিনি ফের হাসপাতালে পৌঁছন এবং দেখেন শিশুর ফের খিঁচুনি শুরু হয়েছে। তখনই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা ও রেফারাল প্রক্রিয়া শুরু করা হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “শূন্য থেকে ছয় বছরের শিশুদের মধ্যে জ্বর বা ইনফেকশন হলে এমন খিঁচুনি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। শেষদিকে শিশুটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিল না বলেই জিবিতে রেফার করা হয়।” খোয়াই জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট জানান, চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি ছিল না। ডাঃ রাজেশ দেববর্মা ছাড়াও, ডাঃ বিশ্বজিৎ দেববর্মা এবং ডাঃ তৃণজিৎ দেববর্মা মিলেই যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছিলেন। তবুও ভবিষ্যতে পরিষেবার মান আরও উন্নত করতে সবাইকে আরও দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি। বিশেষ করে, চিকিৎসকদের হাসপাতালে বেশি সময় দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
অন্যদিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মৃত্যু ঘটে আগরতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।