তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রীর এক্সলুসিভ সাক্ষাৎকার

Untitled-5আগরতলা, (NUT) ।।  “নিউজ আপডেট অব ত্রিপুরা”-র হয়ে গিয়েছিলাম মহাকরনে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী ভানুলাল সাহার সাক্ষাৎকার নিতে, সঙ্গে ছিল সার্বক্ষনিক সঙ্গি শান্তনু। বলা হলো একটু অপেক্ষা করতে, কিছুক্ষন বাদেই ডাকলেন মন্ত্রী মহাশয়। দেখলাম টেবিল ভর্তি গাদাগাদা ফাইল, এমনিতেও ফাইল চালাচালি, নোট লেখা আর বিস্তর সই করতে করতেই দিন কাটে বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীদের। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী ভানুলাল সাহার চেম্বারে প্রবেশ করে বললাম, আপনার ব্যস্ততার ব্যঘাত ঘটানোর জন্য দুঃখিত, বললেন না না তবে অন্য কাজ আছে কথা বলার পর্ব যাতে দীর্ঘায়িত না হয়, কথা না বাড়িয়ে ঢুকে গেলাম প্রশ্নোত্তর পর্বে।

প্রশ্নঃ-  সংস্কৃতির বিকাশে আপনাদের কর্মকান্ড ও তার প্রতিফলন নিয়ে কিছু বলুন।

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ- দেখুন সরকারের নিরন্তর প্রয়াস জারী রয়েছে সংস্কৃতির বিকাশে। মানুষের মধ্যে সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে বিগত এক বছরে বেশ কিছু উদ্যেগ নেয়া হয়েছে, সরকারী উদ্যেগের পাশাপাশি সংস্কৃতির প্রচার প্রসারে বে-সরকারী সংস্থাকেও যুক্ত করায় সংস্কৃতির ব্যপকতার পরিসীমা অনেকটাই বৃদ্ধি হয়েছে।

প্রশ্নঃ- RTI এই রাজ্যে কতদূর বাস্তবায়ন হয়েছে?

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ- বললেন এই রাজ্যে তথ্য গোপনের প্রশ্নই নেই।

RTI যখন প্রবর্তন হয়নি সেই সময়েও এই রাজ্যে পাশাসনিক কাজে কোনো অস্বচ্ছতা ছিলনা, আজকেও নেই, মানুষের কাজে তথ্য গোপন এই রাজ্যে অন্ততঃ একেবারেই প্রয়োজন নেই।

প্রশ্নঃ-সংবাদ মাধ্যম ও তথ্যদপ্তরের নিবিড় সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার প্রশ্নে তিনি বললেন –

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ- অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, উত্তরে আরো বললেন ত্রিপুরায় সংবাদ মাধ্যম তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সম্পর্ক একেবারেই নিকট আত্মীয়তার। সংবাদ মাধ্যমের ঘোষিত নীতিকে মান্য করে কাজের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তবে সঙ্গে বললেন একাংশ সংবাদ মাধ্যম নেতিবাচক সংবাদে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করলেও রাজ্যের সচেতন মানুষ সচেতন ভাবেই সব কিছু যাচাই করে পরিস্থিতির বিচার করেন।

প্রশ্নঃ-আপনি বলছেন সুস্থ সংস্কৃতির ক্রমেই বিকাশ হচ্ছে – তার পেছনে ভূমিকা সবচাইতে বেশী কার?

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ-তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী এর জন্য সব কৃতিত্ব দিলেন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিকে। রাজনৈতিক সংঘর্ষ বিহীন শান্তির বাতাবরন এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিক চর্চার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অবদানের কথা স্বীকার করেছেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী।

প্রশ্নঃ-পারমানবিক ঐতিহ্য ও আধুনিক সংস্কৃতির গতিধারা নিয়ে আপনার বক্তব্য কি?

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ-ঐতিহাসিক পরম্পরার প্রশ্নে কিছু ভালো দিক নিশ্চয়ই আছে তবে নেতিবাচক দিকও আছে। ধর্মের নামে বিভাজন, ধর্মীয় কুসংস্কারও ছিল। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা মানুষকে কুসংস্কার মুক্ত যেমন করে মানুষ মানুষে বিভেদ ঘোচায় – উদাহরনে তিনি বলেছেন সরকারী স্তরে যে কোনো সাংস্কৃতিক মঞ্চে বাংলা, ককবরক সহ বিভিন্ন ভাষার অনুষ্ঠান সাংস্কৃতিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করছে। সুখের কথা বেসরকারী স্তরেও এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।

প্রশ্নঃ-এই রাজ্যের লুপ্ত প্রায় যাত্রা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দপ্তরের মন্ত্রী সরকারী উদ্যোগের কথায় বলেছেন –

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ-এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন সরকার সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল নিয়ে নিরন্তর ভাবনা চিন্তা করছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংস্কৃতিক দল পাঠানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট ভাবে যাত্রা শিল্প নিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেছেন এই শিল্পকে বাঁচানোর প্রয়াস হিসেবে সরকারীস্তরে যাত্রা উৎসবের ভাবনা চিন্তা করছে সারকার।

প্রশ্নঃ-Film Institute কি সত্যিই হতে যাচ্ছে রাজ্যে?

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ- রাজ্যে সিনেমা শিল্পকে পরিপূর্ণ রুপ দিতে ইতিমধ্যেই নজরুল কলাক্ষেত্রে স্টুডিও তৈরী হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্তরে Film Institute তৈরী নিয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে, দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে তিনি এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে Institute তৈরীর চাহিদা নিয়ে রাজ্যে কেউ উৎসাহ দেখায় নি বলে জানান তিনি।

প্রশ্নঃ- দূর্গোৎসব নিয়ে প্রশ্নে বললাম আগে মানুষ তারপর মন্ত্রী, রাজ্যবাসীকে কি বার্তা দেয়ার আছে?

তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীঃ- অবশ্যই শারদ উৎসব এই রাজ্যে মানুষের উৎসবে পরিনত হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাব সহ রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, বলেছেন শান্তির বাতাবরনে আনন্দে অতিবাহিত হোক রাজ্যবাসীর শারদীয়া দূর্গোৎসব।

                                    সাক্ষাৎকার গ্রহনে দেবজিৎ চক্রবর্তী ।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*