গোপাল সিং, খোয়াই, ২০ ডিসেম্বর ৷৷ খোয়াই শহরে নির্মিত দশরথ দেব মমোরিয়াল কলেজ। খোয়াইতে একখানা কলেজ স্থাপনে ত্রিপুরার প্রথম মুখ্যমন্ত্রি শচীন্দ্র লাল সিং, মুখ্যমন্ত্রি সুখময় সেনগুপ্ত, মুখ্যমন্ত্রি নৃপেন চক্রবর্তী, মুখ্যমন্ত্রী দশরথ দেব সহ খোয়াইয়ের আপামর জনগনের অগাধ অবদান রয়েছে।
খোয়াই সরকারী দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ের পাশে প্রথমে ছিল ছন-বাঁশের ঘর। বর্তমানে লালছড়া এলাকায় বিশাল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে কলেজটি। কত ইতিহাস একটি দলিল হয়ে রয়েছে। অথচ মুষ্টিমেয় কিছু আত্মকেন্দ্রিক লোকের জন্য শিক্ষাঙ্গন আজ কলুষিত। শিক্ষা দপ্তর এবং ছাত্র সংগঠন যৌথ প্রয়াসেও মুষ্টিমেয় শিক্ষা গুরুদের কাবু করতে পারছে না। যদিও বিরোধী দলের বিশেষ ভূমিকা ছিল। যে কারনেই হউক শিক্ষাঙ্গন থেকে বিরোধী দলগুলো আলাদিনের চিরাগের মতো হঠাৎ হঠাৎ পাওয়া যায়। অথচ অভিভাবকদের মতামত, প্রশাসনের সর্ব্বময় কর্তাদের বারবার জানিয়েও কোন প্রকার প্রতিকার নেই কেন? কলেজ, যেখানে যুব সমাজ উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের তৈরী করে। এর থেকে কি শিক্ষা তারা পাচ্ছে? কি বার্তাই বা তাদের কাছে যাচ্ছে?
রাজধানী বাদ দিলে রাজ্যের প্রায় অধিকাংশ কলেজেই চলছে এধরনের অরাজকতা। খোয়াই কলেজ এর মধ্যে একটি। এই কলেজ দেখতে বিভিন্ন মহকুমা বা জেলা থেকে যেমন জনসাধারন আসেন তেমনি মন্ত্রি থেকে আমলারাও আসেন। অথচ ঘোটালা প্রবেশ দ্বার থেকেই সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। দশরথ দেব এর আবক্ষ মূর্ত্তিটিকে সাজানো এবং এলাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে উন্নতমানের ঘাস চাষ করে সুন্দর মনোরম করে তুলে ধরার কথা। যা হয়নি। একমাত্র জাগরন পত্রিকায় ছবি সহ এই তথ্যমুলক সংবাদ প্রকাশ করায় বর্তমানে কিছুটা জঙ্গল ছাঁটাই করা হয়েছে। এই স্কিমে প্রায় লক্ষাধিক টাকার উপর হাওয়া গেছে। তারপর রয়েছে নতুন ভবনটি। যার নাম রাখা হয়েছে ‘আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বসু ভবন’। অভিভাবকমন্ডলীর মতামত, উনি বেঁচে নেই। নতুবা মহান বিজ্ঞানীর নাম জড়িয়ে যেভাবে ঘোটালা হয়েছে তাতে তিনিও লজ্জিত হতেন।
ছবিতেই স্পষ্ট কত বড় ঘোটালা হয়েছে। সামনে রয়েছে মেডিসিনাল প্ল্যান্ট গার্ডেন, ভেতরে রয়েছে ফিস ব্রিডিং এবং স্টকিং ট্যাঙ্ক। সব কিছুই সাইনবোর্ড সম্বল। রাস্তারও করুন দশা। এছাড়া খেলার সামগ্রী এবং কম্পিউটার ক্রয় সহ নানান ঘোটালা তো রয়েছেই। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা এইসব সাইনবোর্ড সম্বল প্রজেক্টগুলি দেখে এবং মুচকি হাসে। অভিভাবকরাও মাঝে মাঝে আসেন এবং এই দূরাবস্থা দেখে হতবাক হন। কেউ কেউ ক্ষোভের সুরেই বলেন, এভাবে চলতে পারেনা। ছেলে-মেয়েদের কি শিক্ষা ব্যতীত আর কিছু পাওয়ার নেই? প্রশ্ন অভিভাবকদের।
রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রির নিকট ডেপুটেশন পর্যন্ত দিয়েছে ছাত্র সংগঠন। কিন্তু এরপরও কোন প্রকার বিচার নেই। অভিভাবকদের মতে, এর থেকেই বুঝা যায় ঐসব দূর্নীতিবাজদের হাত অনেক লম্বা। কোনও একদিন জনরোষ ছাড়া হাতে গুনা সমাজ সেবকদের প্রতিকার হবেনা। ছাত্র-ছাত্রীদের স্পেশাল নোট দেওয়ার নামেও নাকি হয়রানী করা হয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। সুতরাং অনতিবিলম্বে কলুসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দূষনমুক্ত করার দাবি অভিভাবকদের।