নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর ।। দেশের মূল ভূখন্ড থেকে কোনো এক সময় এই রাজ্যের অবস্থান প্রায় বিচ্ছিন্নতার পর্যায়েই ছিল। দুর্গম গিরি আর দুস্তর পারাপারের একেবারে বাস্তব ভূমি ছিল ত্রিপুরা। ধীরে ধীরে এই রাজ্যের মানুষের উপলব্ধি হল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ব্যতিরেকে অগ্রগতি অন্ধকারের সমার্থক। দেশের মূল খণ্ডের সঙ্গে রেল যোগাযোগের দাবীতে এই রাজ্যে আন্দোলন, সংগ্রামের পর্বও অতিবাহিত হয়েছে। ক্রমাগত মানুষের দাবীতে এমুহূর্তে আগরতলা পর্যন্ত রেল বিস্তৃত হয়েছে। মিটার গেজ যাত্রী পরিষেবা যে এই রাজ্যের মানুষের যাত্রার দুর্ভোগ পরিসমাপ্ত করেছে তা একেবারেই বলা যাচ্ছেনা, তবে নিঃসন্দেহে মিটার গেজ রেলে যাত্রার যন্ত্রনা সত্ত্বেও মানুষ আস্তে আস্তে রেলে যাত্রা করেই চিকিৎসা, শিক্ষা সহ নানা কাজে বাইরে গেছেন। রাজ্যবাসীর দীর্ঘদিনের অপুরিত স্বপ্ন পূরন করে মিটার গেজের অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যে প্রবেশ করেছে ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন। বহু প্রতীক্ষার পর ব্রড গেজের রেলের বাঁশী প্রতিধ্বনিত হয়েছে পাহাড়ের বুকে। মঙ্গলবার সকালে আসামের বদরপুর থেকে WBC4 12272 নম্বরের একটি ইঞ্জিন ৩ জন চালক নিয়ে যাত্রা শুরু করে দুপুর প্রায় ১টা ৫২ মিনিটে ত্রিপুরার সীমান্ত অতিক্রম করে চুড়াইবাড়ী আসে। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে চুড়াইবাড়ী স্টেশনে হতে উপস্থিত ছিল প্রচুর মানুষ। ঢাক, বাজনা, বাজি, পটকা আর শঙ্খের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে চুড়াইবাড়ী রেল স্টেশন। তারপর কিছুক্ষণ পর চুড়াইবাড়ী স্টেশন থেকে ইঞ্জিনটি রোওনা হয়ে কুমারঘাট মনু হয়ে আমবাসা পর্যন্ত আসে। মিটার গেজ লাইনে রেল যাত্রার সঙ্গে উপরিপাওনা দুঃসহ যাতনার শেষে ব্রডগেজ রেলযাত্রা নিয়ে সর্বত্রই চলছে রেলের গল্প।