দেবজিৎ চক্রবর্তী, আগরতলা, ০৯ মে ৷৷ ১৮৬১ সালে কোলকাতার জোড়া সাঁকোর ঠাকুর বাডীতে যে শিশু জন্মগ্রহন করেছিল, পরবর্তীতে সাহিত্য সৃষ্টিতে গোটা বিশ্বকে সন্মোহিত করেছিলেন বিশ্বকবি। বহুমাত্রিক প্রতিভার বিচ্ছুরনে সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে নব সৃষ্টির উন্মেষ হয়নি। উপন্যাস, নাটক, ছোট গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রকৃতি, মানবতা-র নবরুপ ফুটে উঠেছে বিশ্বকবির কলমের আঁচরে। বিশ্বমানবতার পূজারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাত, পাত, ধর্মে নয় মানুষের বিচার করতেন মনুষ্যত্ব আর মানবতার সংজ্ঞায়। জাত আর ধর্মের বালাই দূর করা কঠিন তবুও বিশ্বকবি বলেছিলেন সমগ্র মানব জাতিকে ঐক্য আর শান্তির সন্ধানে এগিয়ে যেতে হবে। এখানেই বিশ্বকবি আজো প্রাসঙ্গিক। রক্তাক্ত পৃথিবীতে বিশ্বকবির সেই শান্তির বানীতেই লুকিয়ে আছে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের সার্বজনীন বার্তা। সাহিত্যের উৎকর্ষ উদ্ভাবনের জন্য পেয়েছিলেন নোবেল প্রাইজ। মানুষের নিপীড়নে যেমন তাঁর কলম থেকে বর্ষিত হয়েছে তীব্র প্রতিবাদের লেখনী তেমন পরাধীন ভারতের স্বাধীনতার আন্দোলনে কোটি কোটি মানুষকে করেছেন সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অনুপ্রানিত। বিশ্বকবি বলেছিলেন সভ্যতার সংকটে মানুষই পথ খুঁজে নেবে সঙ্কট মোচনে শান্তির পথ। ১৫৭তম জন্মদিনে তাঁরই সৃষ্টিতে হৃদয় হয়েছে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী। সরকারী, বেসরকারী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা রাজ্যে আয়োজন করেছে নানা অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১নং হলে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর তিনদিনব্যাপী মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মূখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। মূখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষনে বিশ্বকবির অবদান নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের সচিব সমরজিৎ ভৌমিক, রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক বিকচ চৌধুরী সহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
মঙ্গলবার সকালে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে রবীন্দ্র কাননের রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে অনুষ্ঠিত হয় প্রভাতী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শুরুর আগে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী ভানুলাল সাহা সহ বিশিষ্ট জনেরা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান। এরপর আয়োজিত হয় বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।