আপডেট প্রতিনিধি, বক্সনগর, ০১ ডিসেম্বর ৷। মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বক্সনগরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। জানা যায়, শনিবার রাত আনুমানিক ১১টা নাগাদ কলমচৌড়া থানাধীন বক্সনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সনগর দক্ষিণ পাড়া এলাকার জলিল মিয়ার ছেলে বিল্লাল মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মিথ্যা মোবাইল চুরির অভিযোগে প্রচন্ডভাবে মারধোর করে। এই মারধরের অভিযোগ উঠে তার আপন মামাতো ভাই, বোন ও মামির উপর। জানা যায়, বিল্লাল মিয়ার বোনের ঘর থেকে কিছুদিন পূর্বে দুইটি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়, এই দুটি মোবাইল ফোন চুরি করে তার আপন মামাতো ভাই, কিন্তু এই মিথ্যা চুরির অপবাদ পরে বিল্লাল বিয়ার উপর, তাই বিল্লাল মিয়ার মামা বারেক মিয়ার স্ত্রী ছেলে ও মেয়েরা মিলে বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে সোমবার রাতে চড়াও হয়। তারপর বারেক মিয়ার মেয়ে পারুল বেগম প্রথম অবস্থায় পেছন দিক দিয়ে বিল্লালের মাথায় একটি বাসের দ্বারা আঘাত করে, বাসের আঘাতে সাথে সাথে বিল্লাল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। লুটিয়ে পড়তেই অন্যরাও তার মাথায় ও শরীরে প্রচন্ড ভাবে লাঠির দ্বারা আঘাত করতে থাকে, পরবর্তী সময়ে এলাকার লোকজনের হস্তক্ষেপে বিল্লাল মিয়া প্রাণে বেঁচে যায়। এই ঘটনার এলাকার লোকজন কলমচৌড়া থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ও এলাকার লোকজন আহত অবস্থায় বিল্লাল মিয়াকে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে রেফার করে। বর্তমানে সে জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিল্লাল মিয়ার মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগাতে জিবি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ও ব্রেইন অপারেশন করার জন্য বহি:রাজ্য রেফার করে। কিন্তু বিল্লাল হতদরিদ্র হওয়ায় তাকে বহি:রাজ্যে নেওয়ার মতো অর্থ তাদের পরিবারের কাছে নেই। তবে পরিবারের তরফ থেকে জানা যায়, যদি তাকে উন্নত চিকিৎসা করতে না পারে তাহলে বিল্লাল মিয়াকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়বে। যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি অথবা কোনো সামাজিক সংস্থা অথবা সরকার যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে সে উন্নত চিকিৎসার দ্বারা বেঁচে যেতে পারে।
অপরদিকে রবিবার সন্ধ্যায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত বারেক মিয়ার মেয়ে পারুল বেগম ও তার দুই ছেলে হাসান মিয়া ও কামাল হোসেন ও শিশু মিয়ার নামে কলমচৌড়া থানায় একটি লিখিত মামলা করা হয়। অপরদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিল্লাল মিয়ার মামাতো বোন জামাই শিশু মিয়াকে আটক করে কলমচৌড়া থানায় নিয়ে আসে। জানা যায়, এই ঘটনার মূল পান্ডা এই শিশু মিয়া। কারণ গত চার দিন আগে বিল্লাল মিয়ার ঘরে শিশু মিয়ার একটি মোবাইল ও তার মামাতো বোনের জামাইয়ের শিশু মিয়ার একটি মোবাইল চার্জে ছিল, এমতাবস্থায় মোবাইলটি চার্জার থেকেই চুরি হয়ে যায়। এই মোবাইল ফোনটি অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও না পেয়ে কলমচৌড়া থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করে। পরে মোবাইলের মালিক এক কবিরাজের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে মোবাইল ফোন দুটি বাড়ির কেউই চুরি করেছে, আর তখনই তাদের সন্দেহ হয় বিল্লাল মিয়া উপর। আর তাতেই সন্দেহভাজন বিল্লাল মিয়াকে এমন মারধর। সামান্য দুটি মোবাইলের কারণে বিল্লাল মিয়াহ আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বিল্লাল মিয়া দিন আনে দিন খায়, হতদরিদ্র কি করে তার পরিবার তাকে চিকিৎসা করে নিয়ে আসবে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে এলাকায়।