গোপাল সিং, খোয়াই, ২৭ অক্টোবর ।। ২৫-খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী ১৯শে নভেম্বর। নিজেদের মতাদর্শ এবং প্রতিশ্রুতির বন্যায় গনদেবতাদের ভাসাতে বদ্ধ পরিকর সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে ভোট প্রচার। ঝড়ো প্রচারে সবার আগে মাঠে নেমেছে বামফ্রন্ট। সবার আগে প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেছে তৃণমুল কংগ্রেস। তারপর সিপিআই(এম), কংগ্রেস এবং বিজেপি। ১৯শে নভেম্বর উপনির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক ময়দান এখন রণক্ষেত্র। প্রয়াত বিধায়ক সমীর দেবসরকারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে এবং শান্তি-সম্প্রীতি-উন্নয়ন এবং সুস্থিতি বজায় রাখতে বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বানে নির্বাচনী বুথ কমিটি ও বুথ অফিসের উদ্বোধনের পাশাপাশি প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি চলছে নির্বাচনী ঝড়ো প্রচার। শুধু নির্বাচনী প্রচারেই নয়, বুথ কমিটি কিংবা বুথ অফিস গঠন বা উদ্বোধনও নয়। মানুষের অভিজ্ঞতার নিরীখে ২৫-খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্ত অনেকটাই এগিয়ে গেছেন। প্রতিটি মানুষের কাছে হয়তো প্রার্থী স্ব-শরীরে পৌছুতে পারছেন না, কিন্তু বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইতে পাড়ায়-পাড়ায়, বাড়ী-বাড়ী ছুটে যাচ্ছেন অন্যান্য বাম নেতৃত্বরা। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গৃহকর্তার সম্মুখে হাজির হচ্ছেন সিপিআই(এম) জেলা, মহকুমা এবং অঞ্চল নেতৃত্বরা। পেছনে লাল সাজে দাঁড়িয়ে পড়ছে নারী-পুরুষের লম্বা লাইন। ২৫-এর প্রতিটি বুথ কেন্দ্রেই প্রতিদিন চলছে প্রচার। বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে পথে নামছেন সিপিআই(এম) খোয়াই মহকুমা সম্পাদক পদ্মকুমার দেববর্মা, সিপিআই(এম) নেতা সুখেন্দু বিকাশ দে, নির্মল বিশ্বাস, বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য, দুলাল দত্ত, আলয় রায়, পলাশ ভৌমিক, গৌতম পাল সহ বিভিন্ন অঞ্চল সদস্যরা। প্রতিদিনের কর্মসূচীতে সামিল হচ্ছেন অসংখ্য বাম কর্মী-সমর্থকরাও। বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বানে পুরুষদের পায়ে পা মিলিয়ে দূর-দূরান্ত হাঁটছেন মহিলারাও। সবার মুখে একটাই কথা – চাই ‘শান্তি-সম্প্রীতি-উন্নয়ন এবং সুস্থিতি’। আর এই ধারা অব্যহত রাখতে মানুষ যেন বদ্ধপরিকর, বলছেন নিজের জয়ের বিষয়ে একশ শতাংশ নিশ্চিত বাম প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্ত। অপরদিকে তৃনমুল কংগ্রেস এই উপনির্বাচনে সর্ব্বভারতীয় তৃনমুল সহ-সভাপতিকে উড়িয়ে এনে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে এ রাজ্যের জন্য কোন মাষ্টার প্ল্যান তৈরী না করে পশ্চিম বাংলার রামায়ন শুনিয়ে অনেক তৃণমুল কর্মী-সমর্থককেই খুশী করতে পারলেন না। তবে প্রতিদিনই তৃনমুলের প্রচার অব্যহত রয়েছে খোয়াইতে। পাল্লা দিয়ে চলছে নির্বাচনী প্রচার, সভা সহ বিভিন্ন কর্মসূচী। লক্ষ্য উপনির্বাচনে জয়ী হওয়া। সেই লক্ষ্যে অনেকটাই পৌছতে পেরেছেন বলে দাবি তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী মনোজ দাসের। অন্যদিকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিকের নেতৃত্বে খোয়াইয়ের প্রার্থী তপন পালকে নিয়ে প্রতিদিন বাড়ী বাড়ী চষে বেড়াচ্ছেন এবং বেশী করে আম জনতার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিজেপি কর্মীদের সাথে নিয়ে বাড়ী বাড়ী প্রচারে সারা পাচ্ছেন বলে আপ্লুত বিজেপি প্রার্থী তপন পালও নিজের জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত। একদিকে বামপন্থী প্রচার, সভা-সমাবেশে বাম নেতৃত্বরা বিজেপি, তৃণমুল কংগ্রেস ও কংগ্রেসকে তুলোধুনো করছেন। অন্যদিকে তৃণমুল কংগ্রেস নেতৃত্বরা বাংলার পরিবর্তনের পাল তোলার চেষ্টায় মগ্ন এবং বিজেপি অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলিকেই এক পাত্রে রেখে বিচার করতে ব্যস্ত। তবে সব প্রচার-প্রসারের মধ্যে সাধারন মানুষকে নিয়ে ভাবনা এবং মানুষের কাছাকাছি কে বা কারা খুব বেশী করে পৌছতে পেরেছে এবং গনদেবতাদের মন জয় করতে পেরেছে তার উত্তর মিলবে ২২শে নভেম্বর। কিন্তু তারও আগে গনদেবতার রায় ইভিএম বন্দী হবে ১৯শে নভেম্বর। এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ সবক’টি রাজনৈতিক দলই।