ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতা

thস্বাস্থ্য ও সচেতনতা ডেস্ক ৷৷ প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে পুদিনা পাতা। ওষুধের পাশাপাশি খাদ্য ও রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে পুদিনা পাতা। আর যত দিন যাচ্ছে তত গবেষণা হচ্ছে পুদিনা ও পুদিনার মতো ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে, আর ততই মানুষ জানছে এর গুণাগুণ সম্পর্কে। তৈলাক্ত মুখে সারা সময়ই একটা-দুটো ব্রণ লেগে থাকে। আর তা সারাতে পুদিনা পাতার জুড়ি নেই। শীতের সময় এর ফলন হয় বেশি এবং সারা বছরও বাজারে কম-বেশি পাওয়া যায়। এবার জেনে নিন রূপচর্চায় এর ব্যবহার। প্রথমে পুদিনা গাছ থেকে শুধু পাতা নিন। ভালো ভাবে ধুয়ে মিহি করে বেটে পেস্টের মতো বানিয়ে রাতে মুখে ভালো ভাবে লাগিয়ে রেখে দিন। পরদিন ভোরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে মাস খানেক লাগানোর পর দেখবেন আপনার মুখে আর আগের ব্রণ নেই। দাগও নেই। রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটোনিউরিয়েন্টসের একটি উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে তাজা পুদিনাপাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস আক্রান্ত স্থানে লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। নতুন কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাস খানেকের মাঝেই দাগ দূর হবে। পুদিনার শেকড়ের রস উকুননাশক হিসেবে খুবই কার্যকরি, এমনকি পাতাও। পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত। পুদিনা পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পড়েন তাদের সমস্যা তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরি। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন। শরীর ঠাণ্ডা রাখার একটি বিশেষ গুণ পুদিনার মধ্যে আছে। গোসলের কিছুক্ষণ আগে পানির মধ্যে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন। সেই পানিতে গোসল করলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে। এ ছাড়া কয়েক ফোঁটা পুদিনার তেল পানির মধ্যে মিশিয়েও গোসল করতে পারেন। পুদিনা ত্বকের যে কোনো সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার পানি তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে দশ থেকে পনেরো চামচ পুদিনার পানি মিশিয়ে গোসল করুন। এর ফলে গরমকালে শরীরে ব্যাকটেরিয়া জনিত দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাবেন, কেননা পুদিনার অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট গুণ অতুলনীয়। ঘামাচি, অ্যালার্জিও হবে না। পুদিনা পাতার রস তাৎক্ষণিক ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে। পুদিনা পাতার রস চামড়ার ভেতর দিয়ে নার্ভে পৌঁছে নার্ভ শান্ত করতে সহায়তা করে। তাই মাথা ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা উপশমে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যায়। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন। পুদিনা পাতাকে সাধারণত আমরা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ানোর কাজেই ব্যবহার করে থাকি, অন্য কোনো কাজে আমরা পুদিনা পাতা ব্যবহার করি না। কিন্তু এই পুদিনা পাতা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি উপাদান। মনে রাখবেন, যেকোনো রূপচর্চাই ধৈর্য ধরে বহুদিন না করলে আপনি তার সঠিক ফল ভোগ করতে পারবেন না।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*