ভূমিকম্পে ধুলোয় মিশল নেপালের ঐতিহাসিক ধরহরা মিনার, ধ্বংসস্তুপের নীচ থেকে উদ্ধার ২০০টি নিথর দেহ

vuকাঠমাণ্ডু ।। ভূমিকম্পে শেষ ১৮৩ বছরের ইতিহাস! শেষ নেপালের ধরহরা মিনার! কম্পনের জেরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে এই হেরিটেজ সাইট। এখনও পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপের নীচ থেকে ২০০টি নিথর দেহ বের করে আনা হয়েছে। আরও অনেকে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কিছুক্ষণের ধ্বংসলীলায় শেষ ১৮৩ বছরের ইতিহাস! শেষ নেপালের ধরহরা মিনার! শনিবার সকালটাও ছিল আর দশটা সকালের মতোই। ইউনেস্কো স্বীকৃত এই ঐতিহাসিক মিনার দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। আচমকাই কেঁপে উঠল মাটি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে শুরু করল ১০ তলা ধরহরা মিনার। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই আটকে পড়েন প্রায় ৪০০ পর্যটক।
কয়েকঘণ্টার চেষ্টায়, কয়েকজনকে বের আনা গেলেও, ইতিহাসের সমাধিতেই শেষঃনিশ্বাস ত্যাগ করেন বেশিরভাগ পর্যটক। দিনের শেষে বেরিয়ে এল তাঁদের নিথর দেহ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০০টি দেহ বের করা হয়েছে। অনেকের তো তাও এল না! চারপাশে শুধুই পরিজনেদের প্রতীক্ষা আর হাহাকার! শনিবারের তাণ্ডব, ইতিহাসের যে অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাল, তার শুরুটা হয়েছিল ১৮৩২ সালে।
ধরহরা মিনারটি তৈরি করেছিলেন নেপালের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ভিমসেন থাপা। প্রথমে তাঁর নামেই পরিচিত ছিল এই মিনার। নাম ছিল ভিমসেন মিনার। ধরহরা মিনারের আগে ১৮২৪ সালে আরও একটি মিনার তৈরি করেছিলেন ভিমসেন। ১৮৩৪-এর ভয়াবহ ভূমিকম্পে, দুটি মিনারই রক্ষা পেলেও, ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রথমটি। যা ভেঙে পড়ে একশো বছর পর, ১৯৩৪ সালে।
সেটাও ছিল একটা ভূমিকম্পের দিন। এটাও ভূমিকম্পের। সেদিন ভেঙে পড়েছিল প্রথম মিনারটি। এদিন সমাপ্তি হল অবশিষ্ট ইতিহাসের। ভেঙে পড়ল ভিমসেনের দ্বিতীয় মিনার।
হিমালয়ের কোলে দেশ। পর্বতে ঘেরা শহর-গ্রাম। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউনেস্কো স্বীকৃত সবথেকে বেশি সংখ্যক ঐহিত্যবাহী জায়গা রয়েছে নেপালে। শনিবারের তাণ্ডবে ছারখার হয়ে গেল, তার অধিকাংশই। যার মধ্যে রয়েছে ইউনেস্কো স্বীকৃতি ঐতিহ্যের নিদর্শন কাঠমাণ্ডুর দরবার স্কোয়ারও।
গত শনিবার ছিল বিশ্ব হেরিটেজ দিবস। তার একসপ্তাহ পরও প্রকৃতির কোপে তছনছ হয়ে গেল, হিমালয়ের হেরিটেজ দেশ।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*