সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ২৭ নভেম্বর || বন দপ্তরের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বাজার নির্মাণ’কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কৃষ্ণপুর বিধানসভার শালবাগান এলাকা, ঘটনা মঙ্গলবার। ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের মুখে নিজের ব্যার্থ পরিচালনার আর্তনাদ শুনে রীতিমতো লেজে গোবরে মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা।
জানা যায়, মুঙ্গিয়াকামী থানাধীন কৃষ্ণপুর বিধানসভার জনজাতি অধ্যুষিত শালবাগান এলাকায় আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশে নতুন ভাবে বন দপ্তরের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে দোকান গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে নতুন একটি বাজার নির্মাণের খবর পৌঁছায় প্রশাসনের কাছে। এই খবর পেয়ে তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন সহ বনদপ্তর এবং পুলিশের একটি যৌথ দল জায়গা দখলকারী স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য যায়। যেহেতু, আগামী কিছুদিনের মধ্যে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক প্রশস্ত করার কাজ শুরু হবে, তাই এখন জাতীয় সড়কের পাশে জায়গা দখল করে নতুনভাবে বাজার না নির্মাণ করতে আবেদন করা হয় দখলকারী স্থানীয় লোকজনদের নিকট। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটাও আশ্বাস দেওয়া হয় যে প্রশাসনিক সহযোগিতায় আগামী দিন তাদের ব্যবসা করার জন্য স্থান প্রদান করা হবে।
অন্যদিকে, এই ঘটনার খবর যায় কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নিকট। খবর পেয়ে মন্ত্রী বাবু স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুরাহা করে নিজে ক্রেডিট নিতে তড়িঘড়ি ছুটে যায় শালবাগান এলাকায়। ঘটনাস্থলে মন্ত্রী উপস্থিত হতেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং মন্ত্রীর উপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার জনজাতি অংশের মানুষজন। মন্ত্রীর সামনেই গণদেবতারা বঞ্চনার আর্তনাদ শুরু করে। মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার উপর ক্ষুদ্ধ এলাকার মানুষজনেরা মন্ত্রীর সামনেই নিজেদের বঞ্চনার রাশি রাশি অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মন্ত্রীর ব্যার্থ পরিচালনাও আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। সাধারণ মানুষজনদের অভিযোগ, মন্ত্রী বাবুর নাকি ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই, আবার সাধারণ মানুষজনের পেটে লাথি মারতে চলে এসেছে। তৎসঙ্গে আরও অভিযোগ করেন যে, উনার বিধানসভায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর থেকে শুরু করে, সমস্ত ধরনের সরকারি সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ এবং এলাকায় বিন্দুমাত্র কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। তাছাড়া, সেই সকল বঞ্চিত মানুষজনেরা মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মাকে ভোট দেওয়ার বিষয় নিয়েও পরিতাপ প্রকাশ করেন।
সব মিলিয়ে বলা চলে গণদেবতার মুখে নিজ বিধানসভায় মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার ব্যার্থ পরিচালনার এই বৃত্তান্ত শুনে একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা মন্ত্রী বাবুর। অবশেষে লেজে গোবরে হয়ে শালবাগান এলাকা পরিত্যাগ করেন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা।